সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: খুনের হুমকি দিয়ে পরিচারিকার নাবালিকা মেয়েকে লাগাতার ধর্ষণ। নির্যাতিতা অন্তঃসত্ত্বা হতেই গ্রেপ্তার সরকারি স্কুলের শিক্ষক। ঘটনাস্থল পশ্চিম বর্ধমানের দু্র্গাপুর।
জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের জেমুয়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুশান্ত পণ্ডিত। তাঁর আবাসনে নিজের নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে পরিচারিকার কাজ করতেন স্থানীয় এক মহিলা। ভয় দেখিয়ে দিনের পর নাবালিকাকে ওই শিক্ষক ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। কাউকে বিষয়টি জানালে নাবালিকা ও তাঁর পরিবারকে খুনেরও হুমকি দিত। লাগাতার ধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে সে। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এর পরই এই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক শোরগোল হয় নিউ টাউনশিপ থানার এমএএমসি এলাকায়। নির্যাতিতার পরিবার স্থানীয় প্রাক্তন কাউন্সিলরের দ্বারস্থ হন। তাঁরই পরামর্শে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিউটাউনশিপ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা মা। অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করা হয় সুশান্ত পণ্ডিতকে।
[আরও পড়ুন: পুনর্নির্বাচনেও রোখা গেল না অশান্তি, কাকদ্বীপ ও মথুরাপুরে কাঠগড়ায় বাহিনী]
নির্যাতিতা নাবালিকার মায়ের কথায়, "আমরা দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাই। এলাকার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সুশান্ত পণ্ডিতের বাড়িতে মেয়েকে নিয়ে পরিচারিকার কাজ করতে যেতাম। আমার কয়েকদিন শরীর খারাপ হয়েছিল। আমি যেতে না পারলে মেয়েকে পাঠানোর কথা জানাতো সুশান্ত পণ্ডিত। না পাঠালে মজুরি কেটে নেওয়াও কথা বলতেন। তাই বাধ্য হয়ে মেয়েই যেত পরিচারিকার কাজে। আর সেই সুযোগেই মেয়েকে লাগাতার ধর্ষণ করা হয়। মেয়েকে হুমকি দিয়ে বলত, যদি মা বাবাকে বিষয়টি জানিয়েছিস তাহলে মেরে ফেলব। কয়েকদিন আগে মেয়ের প্রচণ্ড পেটে ব্যথা হলে পিসিকে বিষয়টি জানায়। তার পর আমরা জানতে পারা মাত্রই দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাই। তখন বিষয়টা জানা যায়।"
দুর্গাপুর নগর নিগমের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী পুরমাতা লাভলি রায় বলেন, "এই ধরনের ঘটনা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। আমি বিষয়টি জানতে পেরেই নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষক প্রশান্ত পণ্ডিতকে গ্রেপ্তার করেছে।" অভিযুক্ত শিক্ষককে সোমবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে আদালত ধৃতের চার দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়।