অর্ণব আইচ: পুলিশ পরিচয় দিয়ে ডাকাতির ঘটনায় এবার গ্রেপ্তার হল আসল পুলিশ। গত জুলাইয়ে মধ্য কলকাতার তালতলায় এক ব্যবসায়ীকে গাড়িতে তুলে সোয়া এক কোটি টাকা ডাকাতির ঘটনার চার মাসের মধ্যেই ধরা পড়ল মাস্টারমাইন্ড এক পুলিশকর্মী। অমিয় উপাধ্যায় নামে ধৃত ওই পুলিশকর্মী উত্তর কলকাতার কাশীপুর থানার কর্মরত ছিল। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে সাসপেন্ড করে লালবাজার।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ৬ জুন দুপুর সাড়ে বারোটায় এই ঘটনাটি ঘটে। ওই দিন দক্ষিণ কলকাতার ডোভার টেরেসের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি তাঁর দুই সহযোগীর সঙ্গে লেনিন সরণির একটি অফিস থেকে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা তোলেন। ওই টাকা ব্যাগে করে নিয়ে লেনিন সরণি ধরে তাঁরা হেঁটে যাচ্ছিলেন। তখন কয়েকজন মিলে পুলিশকর্মী পরিচয় দিয়ে তাঁর পথ আটকায়। ওই ব্যক্তিকে টাকা সহ গাড়িতে তুলে অস্ত্র দেখিয়ে গাড়ির মধ্যেই টাকা লুঠপাট করে তাঁকে সল্টলেকের করুণাময়ীতে নিয়ে গিয়ে গাড়ি থেকে ঠেলে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। যদিও তিনি ১৯ জুলাই তালতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ওই এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ ধরে তদন্ত শুরু করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। সেই সূত্র ধরেই প্রথমে প্রসেনজিৎ সিংহরায় নামে এক ব্যক্তিকে তাঁরা গ্রেপ্তার করেন। তাকে জেরা করে আরও চারজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
[আরও পড়ুন: রক্ষকই ভক্ষক! যুবককে অপহরণ করে মিথ্যে মামলার হুমকি, দেড় লক্ষ টাকা আদায় পুলিশের]
জেরার মুখে তারা দাবি করেছিল যে, পুলিশের হাবভাব নকল করা তাদের শিখিয়েছে এক পুলিশকর্মী, যাকে তারা চেনে না। সে-ই এই ডাকাতির মাস্টারমাইন্ড বলে জানা যায়। প্রথমে সিসিটিভির ফুটেজে কিছু মেলেনি। এলাকার কল ডাম্প করেন গোয়েন্দারা। ওই গাড়ির সূত্র ধরেও বেশ কিছু তথ্য মেলে। তারই ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশ কাশীপুর থানার কনস্টেবল অমিয় উপাধ্যায়কে শনাক্ত করে। মোবাইলের সূত্র ধরে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হন যে, অমিয় ঘটনার সময় লেনিন সরণিতে ছিল। সে অন্যদের সঙ্গে গিয়েছিল সল্টেলেকেও। টাকার সিংহভাগ সে নিজের কাছে রেখেছিল বলে অভিযোগ।
রবিবার ধৃতকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। এই ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে অন্য কোনও পুলিশকর্মী যুক্ত, এমন সম্ভাবনা পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। সেই তথ্য জানতে ধৃতকে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।