সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: ঘরে রাখা হোয়াইট বোর্ড। তাতে ধাপে ধাপে কষা অঙ্ক। তবে অঙ্ক অসমাপ্ত। বোর্ডে লেখা, “মা, আই কুইট”। আর ঘরে ঝুলছে ছেলের দেহ। নিজের বাড়ি থেকেই দ্বাদশ শ্রেণির স্কুলছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে শিলিগুড়ির (Siliguri) জ্যোতিনগরে তীব্র চাঞ্চল্য। পড়াশোনা নিয়ে অত্যধিক মানসিক চাপ নাকি অন্য কোনও কারণে এমন পরিণতি মেধাবী ছাত্রের? আত্মহত্যার কারণ নিয়ে এখনও জারি ধোঁয়াশা। পুলিশ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, শিলিগুড়ির জ্যোতিনগর এলাকায় বাস আত্মঘাতী ছাত্র সোমনাথ সাহার। শিলিগুড়ি উচ্চতর বালক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল সে। বরাবরই পড়াশোনায় ভাল ছিল সোমনাথ। মাধ্যমিকে ৯৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল। পদার্থবিদ্যা নিয়ে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখত সোমনাথ। তবে মঙ্গলবার রাতেই থমকে গেল সব কিছু। কারণ, ওইদিন বাড়ি থেকে সোমনাথের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
[আরও পড়ুন: করোনাতঙ্ক কাটিয়ে লক্ষ্মীবারই খুলছে কালীঘাট মন্দিরের গর্ভগৃহ]
ময়নাতদন্তের পর বুধবার দুপুরে ওই ছাত্রের দেহ বাড়িতে আসে। তার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা। সোমনাথের বাবা সুবীর সাহা বলেন, “ছেলে সবসময় উচ্চশিক্ষা নিয়ে খুব চিন্তিত ছিল। মঙ্গলবার দুপুরেও বাড়িতে সবার সঙ্গে সময় কাটায়। এরপর নিজের ঘরে পড়াশোনা করছিল। তারপর বিকেল নাগাদ ওর ঘরে উঁকি দিয়ে দেখি দেহ ঝুলছে। জানিনা কেন এই ঘটনা ঘটাল।”
শিলিগুড়ির ছাত্রের বন্ধুদের দাবি, ছোটখাট বিষয়ে খুব দুশ্চিন্তা করত সোমনাথ। পড়াশোনায় অত্যন্ত মনোযোগী ছিল। এমনকী অঙ্ক বা অন্য কোনও বিষয়ে পড়াশোনায় সামান্য ঘাটতি হলেও মন খারাপ হত সোমনাথের। ছোট থেকেই কোনও প্রতিযোগিতায় হারলেও মানসিক অবসাদে ভুগত সে। ওই মেধাবী ছাত্রের সঙ্গে মায়ের সম্পর্ক অত্যন্ত ভাল ছিল। তাই হোয়াইট বোর্ডে মাকে উদ্দেশ্য করে লিখেই আত্মহত্যা বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই ধরনের ঘটনায় কার্যত বিস্মিত মনোবিদরাও।