সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: গাছের তলায় পাতা লুডোর বোর্ড। খেলতে ভিড় জমিয়েছে আট থেকে আশি। এ দৃশ্যটা কয়েক বছর আগে দেখা গেলে অবাক হওয়ার কথা ছিল না। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। মানুষের জীবনে এসেছে স্মার্টফোন। লুডো খেলার ইচ্ছা হলেও সেটাও স্মার্টফোনেই হয়ে যায়। তবে এবার অন্য দৃশ্য দেখল তাহেরপুরের বেরা কামগাছি গ্রাম। প্রায় ১৪৪ বর্গফুটের কাপড়ের লুডো পেতে খেললেন স্থানীয়রা। যা তৈরি করেছেন ওই গ্রামেরই এক বাসিন্দা।
রানাঘাট (Ranaghat) মহকুমার তাহেরপুর থানার বাসিন্দা অভয়কুমার বিশ্বাস। পেশায় দর্জি তিনি। তাহেরপুরের ভাঙা লাইন বাজারে একটি দর্জির দোকান রয়েছে তাঁর। তিনি বানিয়ে ফেলেছেন কাপড়ের ১৪৪ বর্গফুটের লুডোর বোর্ড। তার সঙ্গে মিল রেখে তৈরি করা হয়েছে ছক্কা ও গুটি।
[আরও পড়ুন: প্রচারে বেরিয়ে অসুস্থ, হাসপাতালে মৃত্যু মুর্শিদাবাদের তৃণমূল নেতার]
জানা গিয়েছে, এর আগেও একবার এই রকমের লুডো (Ludo) বোর্ড বানান অভয়বাবু। তবে তা হারিয়ে ফেলেন তিনি। ২০১৬ সালে তিনি আবার ঠিক করেন কাপড়ের বড় লুডো বানাবেন। দীর্ঘ সাত ৭ বছরের চেষ্টায় তৈরি করেন এই লুডোটি। অভয়কুমার জানান, সমাজের নতুন প্রজন্ম মোবাইলের প্রতি চূড়ান্ত আসক্ত। তারা মাঠে নেমে খেলতেই ভুলে যাচ্ছে। এমনকী বন্ধুদের সঙ্গে লুডো, দাবা, সাপ-সিঁড়ি খেলাও ভুলে গিয়েছে তারা। স্মার্টফোন রীতিমতো ঘরকুনো করে তুলেছে তাদের। বিজ্ঞানের অগ্রগতি অসামাজিক করে তুলছে খুদেদের। তাদের ভারচুয়াল দুনিয়া থেকে বের করে সচেতন করতেই এই প্রয়াস। তিনি চান, স্মার্টফোনের আগের যুগ আবার ফিরুক নবপ্রজন্মের হাত ধরে। ঘরের চার দেওয়াল থেকে ফিরে মুক্ত আকাশের নিচেই খেলার পরিবেশে বেড়ে উঠুক তারা। অভয়বাবুর এই কাজের প্রশংসা করেছেন সমাজের বিশিষ্টজনেরাও।