শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: পরপুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে স্ত্রীর। স্রেফ এই সন্দেহে স্ত্রীকে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে। বাধা দিতে গিয়ে আহত হয়েছেন শ্বাশুড়ি কল্পনা সরকার (৫৫)। মঙ্গলবার দুপুরে জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির চারের বাড়ির ধওলা বাড়ি গ্রামে ঘটেছে ঘটনাটি। পলাতক অভিযুক্ত জামাই সুজিত ভৌমিক। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে ধওলাবাড়ি গ্রামের সরকার বাড়ির মেয়ে মিতালি সরকার (৩১)-এর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল এলাকারই যুবক সুজিত ভৌমিকের (৩৫)। দম্পতির নয় বছরের একটি ছেলেও রয়েছে। মিতালির দিদি চৈতালির অভিযোগ, গত কয়বছর ধরে স্ত্রীকে সন্দেহ করত সুজিত। বাপের বাড়িতে গিয়ে বোন কারও সঙ্গে কথা বললেও সন্দেহ করত অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে বলে। কিছুদিন আগে মিতালি, চৈতালির বাবা মন্মথ সরকারের মৃত্যু হয়। এরপর অশান্তি শুরু হয় সম্পত্তির ভাগ নিয়ে।
[আরও পড়ুন: লক্ষ টাকার বিনিময়ে ‘কাস্তে হাতুড়ি’ প্রতীক বিক্রি! প্রতিবাদে বিক্ষোভ-অবরোধ, পুড়ল নেতার ছবিও]
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুরে বাপের বাড়িতে ফোনে কথা বলছিলেন মিতালি। হঠাৎ চলে আসে সুজিত। মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে পাসওয়ার্ড জানতে চায়। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর বচসা শুরু। দিদি চৈতালির দাবি, খবর পেয়ে ছুটে এসে দেখতে পান রক্তারক্তি কাণ্ড। জানতে পারেন অশান্তির সময় আচমকা কুড়ুল নিয়ে স্ত্রীর উপর চড়াও হয় সুজিত। বাধা দিতে গেলে স্ত্রী মিতালির পাশাপাশি শ্বাশুড়ি কল্পনাকেও আঘাত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় দু’জনকে উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান প্রতিবেশীরা। হাসপাতালে ভরতির কিছুক্ষনের মধ্যে মিতালি সরকারের মৃত্যু হয়। শ্বাশুড়ি কল্পনা সরকারের আঘাত ও গুরুতর।
ঘটনার পরই গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত জামাই সুজিত ভৌমিক। ময়নাগুড়ি থানার আইসি তমাল দাস জানান, কী কারণে এই ঘটনা তা স্পষ্ট নয়। মোবাইল ফোনে কথা বলা নিয়ে স্ত্রীকে সন্দেহ করতো বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি শ্বশুরের সম্পত্তির ভাগ নিয়েও গণ্ডগোল চলছিল। ঘটনার পর গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত। তার খোঁজে বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চলছে। অভিযুক্ত ধরা পড়লেই খুনের কারণ স্পষ্ট হবে।