দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: সাপে কামড়ানোর পর চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে বৃদ্ধাকে নিয়ে ওঝার দ্বারস্থ পরিবার। পরিণতি মৃত্যু। ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবল শোরগোল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে। ইতিমধ্যেই দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সাহিদা শেখ (৬৪)। তাঁর বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি থানার ১ নম্বর মেরীগঞ্জ এলাকায়। স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, বৃহষ্পতিবার প্রবল বর্ষণে ওই মহিলার বাড়ির পুকুর জলে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। দুপুর দুটো নাগাদ কোনওকাজে পুকুর পাড়ে গিয়েছিলেন সাহিদা। সেই সময় বিষধর সাপ তাঁর হাতে কামড় দেয়। তিনি তড়িঘড়ি বাড়িতে ফিরে আসেন। পরিবারের লোকজনদের ঘটনার কথা জানায়। পরিবারের লোকজন ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি ফকির নামে এক ওঝার কাছে নিয়ে যায়। সেখানে দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে ঝাড়ফুঁক। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। উলটে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। বেগতিক বুঝে গুণিন ওই বৃদ্ধাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরিবারের লোকজন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছটা নাগাদ ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।
[আরও পড়ুন: বিতর্কের অবসান, বেঙ্গল সাফারি পার্কের সিংহ ‘আকবর’ ও সিংহী ‘সীতা’র নামবদল]
মৃত বৃদ্ধার ছেলে আমিনউদ্দিন শেখ জানিয়েছে, "কী সাপ কামড় দিয়েছে আমরা জানতাম না। স্থানীয় ওঝার কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। ঝাড়ফুঁক করেছিল। তার পর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয়।" ঘটনা প্রসঙ্গে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সর্প বিশেষঞ্জ চিকিৎসক ডাঃ সমরেন্দ্র নাথ রায় জানিয়েছেন, "সাপের কামড় তার পর ওঝা। পরিশেষে মৃত্যু! এটা খুবই দুঃখজনক। সাধারণ মানুষকে বলব, সাপে কামড় দিলে নিকটবর্তী সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাবেন যত দ্রুত সম্ভব। তাহলে মৃত্যু থেকে অব্যাহতি মিলবে। নচেৎ ওঝা-গুণিনের দ্বারস্থ হলে মৃত্যু নিশ্চিত।"