শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: মনুয়াকাণ্ডের ছায়া এবার চন্দ্রকোনায়। প্রেমিকের সঙ্গে পরিকল্পনা করে স্বামীকে খুনের অভিযোগ বধূর বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipur) চন্দ্রকোনার ক্ষীরপাই এলাকায়। ইতিমধ্যেই ওই মহিলা ও তার প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত বাকিদের খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ক্ষীরপাই পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বামারিয়া এলাকার বাসিন্দা তপন ঘোষ। তাঁর স্ত্রী রূপালি। দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে ওই দম্পতির। তাঁদের মধ্যে এক মেয়ে ও ছেলে পড়াশোনার জন্য বাইরে থাকেন। ছোট মেয়ে ওই দম্পতির সঙ্গেই থাকে। দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে সে। অন্যান্যদিনের মতোই রবিবার খাওয়াদাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়েন ঘোষবাড়ির সকলে। মাঝরাতে রূপালিদেবী প্রতিবেশীদের জানান, হৃদরোগে আক্রাম্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে স্বামীর। তিনি বলেন, রাত ১১ টা নাগাদ বাথরুমে যাওয়ার সময় আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন তপনবাবু। তারপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করে।
[আরও পড়ুন: মাঝরাতে ফাঁকা গলি থেকে প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার তরুণী, ধূপগুড়িতে ঘনাল রহস্য]
এই খবর পেয়ে কলকাতা থেকে চন্দ্রকোনায় যান মৃতের ভাই মহাদেব ঘোষ। তপনবাবুকে দাহ করার ব্যবস্থা করা হয়। পরিবার-প্রতিবেশীরা তপনবাবুকে মাল্যদান করেন। সেই সময়ই প্রকাশ্যে আসে চাঞ্চল্যকর বিষয়। দাদার দেহে মালা দেওয়ার সময় মহাদেব দেখেন, তার গলায় কালশিটে দাগ। তাতেই সন্দেহ হয় তাঁর। সঙ্গে সঙ্গে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। এরপরই খবর দেওয়া হয় পুলিশে। দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। এরপরই ঘটনার জন্য মৃতের স্ত্রীকে তোলা হয় কাঠগড়ায়।
মৃতের আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের দাবি, চন্দ্রকোনার বাসিন্দা এক গাড়ি ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল রূপালির। তা নিয়ে প্রচুর অশান্তিও হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রেমিকের সঙ্গে ছক কষেই স্বামীকে খুন করেছে ওই মহিলা। মৃতের ছোট মেয়ে জানিয়েছে, রবিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ ২ জন তাদের বাড়িতে গিয়েছিল। রূপালির সঙ্গে কথাও বলেন। এতেই জোড়াল হয়েছে খুনের সন্দেহ। এদিন দুপুরেই মৃতের দাদার অভিযোগের ভিত্তিতে রূপালিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কয়েকঘণ্টার ব্যবধানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার প্রেমিক শান্তনু পালকে। চলছে তদন্ত।