দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: প্রায় দুই সপ্তাহ পর নিখোঁজ স্ত্রীকে খুঁজে পেলেন স্বামী। সৌজন্যে হ্যাম রেডিও। ঘরের লোক ঘরে ফেরায় খুশির হাওয়া হাওড়ার (Howrah) বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে।
হওড়ার ঢাকুরিয়া রায়পাড়ার বাসিন্দা রঞ্জিত বন্দোপাধ্যায়। সালকিয়ায় তাঁর একটি স্টেশনারি দোকান রয়েছে। গত ১১ মে সকাল সাড়ে ছ’টায় সালকিয়ার বাপের বাড়ি থেকে সকলের চোখের আড়ালে বেরিয়ে যান রঞ্জিতবাবুর স্ত্রী পূর্ণিমাদেবী। সেই থেকে তিনি বেপাত্তা। রঞ্জিতবাবু জানান, তাঁর স্ত্রীর একটু মানসিক সমস্যা রয়েছে। বাড়িতে ডাক্তার দেখানো হচ্ছিল। শাশুড়ি রেনুকা রায় কিছুদিনের জন্য সালকিয়ার বাপের বাড়ি নিয়ে গিয়ে মেয়েকে নিজের কাছে রাখেন। ১১ মে যখন রেনুকাদেবী বাথরুমে গেলে পূর্ণিমা গেট খুলে বাইরে বেরিয়ে যান। তারপর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এই বিষয়ে হাওড়ার মালিপাঁচঘড়া থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। অসহায় রঞ্জিতবাবু গত দুই সপ্তাহ ধরে তাঁর দোকান বন্ধ রেখে স্ত্রীকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়িয়েছেন।
[আরও পড়ুন: একলাফে বেতন বাড়ল আড়াই হাজার টাকা, উচ্ছ্বসিত ক্ষুদ্রশিল্পের ১০ হাজার শ্রমিক]
ইতিমধ্যে গত ১৫ মে শ্রীরামপুরে গঙ্গার ঘাটে এক মহিলাকে লাঠি হাতে শিক্ষিকার ভূমিকায় কোনও একটি ছেলেকে পড়াতে দেখেন স্থানীয়রা। কিন্তু ওই মহিলার কথাবার্তায় অসংলগ্নভাব দেখে সন্দেহ হয়। এরপর তাঁরা ওই মহিলাকে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ভরতি করে দেয়। হাসপাতাল অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার বাসুদেব জোয়ারদার হ্যাম রেডিওর ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সদস্য দিবস মণ্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। হ্যাম রেডিওর সম্পাদক অম্বরীশ নাগবিশ্বাস বলেন, “হাসপাতালে ওই মহিলার সঙ্গে দেখা করার পর তিনি নিঃসন্তান হওয়া সত্ত্বেও বারংবার একটাই কথা বলে যাচ্ছিলেন যে, তাঁর দুটি সন্তান রয়েছে। বাড়ি একবার মুকুন্দপুর বলছেন আর একবার বলছেন মেদিনীপুর। এরপর ওই ভদ্রমহিলার ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকেই খবর পাওয়া যায় যে ঢাকুরিয়ার রায় পাড়ার বাসিন্দা রঞ্জিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী পূর্ণিমা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্ত্রীর ছবি দেখার পরই রীতিমতো উতলা হয়ে ওঠেন রঞ্জিতবাবু। তিনি আধার কার্ড ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নথি দিয়ে প্রমাণ করেন যে পূর্ণিমা তাঁর স্ত্রী।”
স্ত্রীকে খুঁজে পেয়ে রীতিমতো খুশি রঞ্জিতবাবু। হ্যাম রেডিওকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি জানান, হ্যাম রেডিও তাঁর জন্য যে কাজ করল তা কোনওদিন ভুলবার নয়।