বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন মা। তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না ছেলে। তা নিয়ে অশান্তিও হয়েছে। সেই অশান্তির পরিণতি হল মর্মান্তিক। মায়ের প্রেমিককে প্রকাশ্য রাস্তায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাল ছেলে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রবিবার সকালে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার (Nadia) শান্তিপুর থানার বাইগাছিপাড়ায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তিপুর বাইগাছিপাড়াতে বাড়ি পেশায় হোটেল ব্যবসায়ী কল্যাণ গুহর। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী তুলি, তেইশ বছরের মেয়ে, একুশ বছর বয়সি ছেলে। একইপাড়ার বাসিন্দা অভিযুক্তের মা। বাবা ছিলেন পেশায় হার্ডওয়ারের ব্যবসায়ী। অভিযোগ, অভিযুক্তের মায়ের সঙ্গে প্রায় ১৩ বছর ধরে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল কল্যাণ গুহর। কল্যাণের স্ত্রী বলেন, “স্বামী বেঁচে থাকাকালীন ওই মহিলা আমার স্বামীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। সেই সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়। ওই সম্পর্ক নিয়ে আমাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একাধিক দিন অশান্তি হয়েছে। আমাদের ছেলেমেয়েরাও বাবার সেই সম্পর্কের কথা জেনে ফেলায় রাস্তায় মাথা উঁচু করে চলাফেরা করতে পারে না। দীর্ঘদিন তারা তাদের বাবাকে ওই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বলেছে। কিন্তু আমার স্বামী কারও কথা শোনেনি।”
[আরও পড়ুন: ট্রাকে চাপিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ক্যাঙারু পাচারের ছক, উত্তরবঙ্গে ধৃত ২]
স্বামীর মৃত্যুর পর প্রেমিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে মহিলার। এদিকে মায়ের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জন্য ২৬ বছরের ছেলেকে বিভিন্নভাবে তার বন্ধু বান্ধবীদের কাছে অপমানিত হতে হচ্ছিল। শ্বশুরবাড়িতেও তাঁকে কটূ কথা শুনতে হচ্ছিল। সেই অপমান সহ্য করতে না পেরে কল্যাণকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপায় অভিযুক্ত যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, কল্যাণ গুহ রবিবার সকালে হোটেল থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে নিজের বাড়ির দিকে ফিরছিলেন। আগে থেকেই বাড়ির কাছে মোটরবাইক নিয়ে অপেক্ষারত ছিল অভিযুক্ত। সুযোগ বুঝে কল্যাণের মাথা ও শরীরের একাধিক জায়গায় এলোপাথাড়ি কোপায় সে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে যান কল্যাণ। এরপরই উধাও হয়ে যায় অভিযুক্ত।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তড়িঘড়ি কল্যাণ গুহকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। ওই হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির মাথায় ও হাতে মোট ১৮টি সেলাই পড়েছে। বর্তমানে তার অবস্থা সঙ্কটজনক। আহত কল্যাণ গুহর স্ত্রী তুলি বলেন, যে এই কাজ করেছে, তার কঠোর শাস্তি চাই। যদিও কল্যাণ গুহকে এলোপাথাড়ি কোপানোর জন্য নিজের ছেলের শাস্তি চাইলেও বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে কল্যাণের প্রেমিকা স্পষ্ট জানিয়েছেন, “সম্পর্ক থাকতেই পারে। এসব এখন আকছার ঘটে। এসব কোনও ব্যাপার নয়।”