বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: হাতে ছুরি। দৌড়ে যাচ্ছে এক যুবক। প্রথমে দু’জন জিআরপির উপর হামলা চালায় সে। তাকে বাধা দিতে গিয়েছিলেন এক মহিলা। তাঁকেও ছুরি দিয়ে আঘাত করে সে। এভাবে একে একে পাঁচজন জখম হন। মঙ্গলবার সন্ধেয় এমনই রক্তারক্তি কাণ্ডের সাক্ষী নদিয়ার কল্যাণী স্টেশন (Kalyani Station)। পুলিশ এই ঘটনার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন। তাই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে সে।
কল্যাণী মেন স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন থেকে উলটো দিকে নামে ইয়াকুব বিশ্বাস নামে ওই যুবক। যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে তাঁকে প্ল্যাটফর্মে ডাকেন জিআরপির কনস্টেবল শোভন ঘোষ এবং সিভিক ভলান্টিয়ার বিপ্লব দত্ত। যুবকের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন তাঁরা। দাবি, ওই যুবকের কথায় ছিল হাজারও অসংগতি। জিআরপি অফিসে যেতে বলা হয় তাকে। মুহূর্তের মধ্যে রুদ্ররূপ ধারণ করে ওই যুবক। হঠাৎই তার হাতে থাকা প্লাস্টিকের কালো ব্যাগ থেকে ধারালো অস্ত্র বের করে। শোভনের বুকে আঘাত করে। সিভিক ভলান্টিয়ার বিপ্লব তাতে বাধা দিতে যান। তাঁর পেটেও ছুরি চালিয়ে দেয় ওই যুবক।
[আরও পড়ুন: কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের রোগীরা পেলেন বাংলাদেশের ওষুধ! তদন্ত কমিটি গঠন স্বাস্থ্যভবনের]
কল্যাণী স্টেশনের হকাররা জানান, ইয়াকুব বিশ্বাস একাই ছিল। এই ঘটনার ঘটার পর হাতের ধারালো অস্ত্র শূন্যে ঘোরাতে থাকে। প্ল্যাটফর্মে তখন ভরতি লোকজন। ভয়ে সবাই সিঁটিয়ে যান। পালাতে গিয়ে কেউ কেউ পড়েও যাণ। আবার কেউ কেউ স্টেশনের আরপিএফের অফিসেও ঢুকে যান। ভয়ে কেউই প্রথমে কাছে যায়নি। সেই ফাঁকে পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়ার সময় স্টেশনের এক বয়স্ক হকারকে ধাক্কা মারে সে। এভাবে অন্তত ৫ জনকে আঘাত করে ইয়াকুব। শেষ পর্যন্ত রাত ন’টা নাগাদ কল্যাণী আইটিআই মোড়ের কাছে পরপর তিনজনকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে যায় ইয়াকুব বিশ্বাস। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ সূত্রে খবর, ইয়াকুব নাকাশিপাড়া থানার নাগাদি পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ইয়াকুবের মানসিক সমস্যা রয়েছে। সে কারণে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।
কল্যাণী জিআরপির কনস্টেবল এবং সিভিক ভলান্টিয়ারের আঘাত বেশ গুরুতর। দু’জনকেই গুরুতর আহত অবস্থায় কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সিভিক ভলান্টিয়ার বিপ্লব দত্তের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাই তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। জখম হকারও বর্তমানে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতলে ভরতি রয়েছেন।