সৈকত মাইতি, তমলুক: ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন। স্ত্রীর মন রক্ষায় কখনও অসহ্য গরমে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে গাছে উঠে ডাব পেড়ে তা বিক্রি করেছেন। কখনও নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেছেন। তাতেও স্ত্রীর মন পাননি যুবক। যার পরিণতি হল মর্মান্তিক। অবশেষে অপমান, অবসাদে আত্মঘাতী হলেন যুবক। ঘটনার সাক্ষী নন্দকুমার থানার শীতলপুর।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নন্দকুমার থানার শীতলপুর গ্রামের বাসিন্দা ঈশ্বর ঘড়ুই (৩০)। প্রায় বছর ১২ আগে পাশের ভবানীপুর এলাকার বাসিন্দা প্রীতিকণার সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে হয় তাঁর। বর্তমানে তাঁদের প্রায় ১১ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। অভিযোগ, প্রায় বছর দুয়েক আগে যুবকের ছোট বোনের স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন প্রীতিকণা। তা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তীব্র দাম্পত্যকলহ শুরু হয়। এর জেরে মাস দেড়েক আগে স্বামীর সংসার ছেড়ে ছোট নন্দাইয়ের হাত ধরে পালিয়ে যান নন্দকুমারের ওই গৃহবধূ। বহু খোঁজাখুঁজির পর গত সপ্তাহে তাঁদের রাধামনি এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। সে যাত্রায় বাড়ি ফিরে আসেন প্রীতিকণা। ৪ দিনের ব্যবধানে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ফের প্রেমিকের হাত ধরে পালান ওই গৃহবধূ। এতেই তীব্র মানসিক অবসাদে ভেঙে পড়েন ঈশ্বর।
[আরও পড়ুন: রেড কার্পেট পেতে অপেক্ষায় ‘বিদ্রোহী’ বিধায়ক করিম চৌধুরী, গেলেনই না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়!]
রবিবার সকাল ৮ টা নাগাদ নিজের ঘরে সিলিং ফ্যানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন যুবক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয়দের চেষ্টায় তাঁকে নন্দকুমার খেজুরবেড়িয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিন তাম্রলিপ্ত মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহটি পরিবারের হাতে তুলে দেয় পুলিশ। মৃতের বড়দাদা শম্ভু ঘড়ুই বলেন, “মাসদেড়েক আগে ভাইয়ের স্ত্রী বোনের বরের সঙ্গে ভালোবাসার টানে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল। বহু চেষ্টার পর তাঁদের বাড়ি ফিরিয়ে আনা হলেও আবার পালিয়ে যায়। তার জেরেই মনের দুঃখে গলায় দড়ি নিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে ভাই।”
শীতলপুর পশ্চিম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কাকলি জানা বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে একটা অশান্তি চলছিল। এর ফলে স্বামীকে ফেলে স্ত্রী পালিয়ে যায়। আর তারই জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। এবিষয়ে নন্দকুমার থানার ওসি মনোজ কুমার ঝা বলেন, “মানসিক অবসাদে এক যুবক আত্মঘাতী হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মামলা রুজু হয়েছে।”