শান্তনু রায়, জলপাইগুড়ি: বাড়ির পছন্দে বিয়ে করবে বলে দীর্ঘদিনের সম্পর্কে ইতি টেনেছে প্রেমিকা। এই অভিযোগ তুলে তরুণীর বাড়ির সামনে ধরনায় বসলেন যুবক। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ময়নাগুড়ির (Maynaguri) অর্জুনের বাড়ি এলাকা। বসানো হয় সালিশি সভা। তা সত্ত্বেও উত্তেজনা ছড়ায়। শেষে বাধ্য হয়ে নামানো হয় ব়্যাফ।
জানা গিয়েছে, ময়নাগুড়ির নাউয়াপাড়ার বাসিন্দা রাজকুমার রায়। তাঁর ছেলে মিঠুনের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই অর্জুনবাড়ির বাসিন্দা কমল রায়ের মেয়ের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল তাঁর। বিয়ের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎই তাঁকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে ওই তরুণী। মিঠুনের অভিযোগ, পরিবারের চাপে অন্যত্র বিয়েতে সম্মতিও দেয় তাঁর প্রেমিকা। এরপরই প্রেমিকাকে ফিরে পেতে ধরনায় বসেন মিঠুন।
[আরও পড়ুন: ২ দিনে তিনটি, মালদহে ফের ভিনরাজ্য থেকে ভেসে এল দেহ! চিন্তায় প্রশাসন]
বিষয়টিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াতেই স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটমাট করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। পরে বাধ্য হয়ে খবর দেওয়া হয় পুলিশে। ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ গিয়ে যুবককে বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রেমিকা না পেলে ফিরতে রাজি হননি তিনি। স্থানীয়দের একাংশও যুবকের পাশে দাঁড়ান। যার ফলে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়। পরে ময়নাগুড়ি থানার আইসি ভূষন ছেত্রী আরও পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। তারপরও পরিস্থিতি আয়ত্তে আনা যায়নি। পরে জলপাইগুড়ির ডিএসপি (ক্রাইম) বিক্রমজিৎ লামা অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাফ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। রাতেই ওই যুবককে তাঁর বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ওই যুবতীর বাবা কমল রায়ের দাবি, তাঁর মেয়ের সঙ্গে ওই যুবকের কোনও সম্পর্ক ছিল না। যুবকের বাড়ি থেকে একাধিকবার বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। মেয়ে তাকে বিয়ে করতে রাজি নয়। তাই সেই প্রস্তাব খারিজ করে অন্যত্র মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছেন। সেই কারণে চক্রান্ত করা হচ্ছে। ওই যুবতীও জানিয়েছেন যে মিঠুনের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না এবং তাঁকে বিয়ে করতে তিনি রাজি নন। যদিও এবিষয়ে যুবকের বাড়ির লোকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ডিএসপি(ক্রাইম)বিক্রমজিৎ লামা জানান, “এক যুবকের ধরনায় বসাকে কেন্দ্র করে তুমুল ঝামেলা বেঁধেছিল। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করা হয়। যুবক ও যুবতী উভয় পক্ষের অভিভাবক নিজেদের ছেলে ও মেয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন।”