shono
Advertisement

দমদমের পর কালীঘাট, চোর সন্দেহে হাত-পা বেঁধে গণধোলাইয়ে মৃত যুবক

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে যুবকের দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। The post দমদমের পর কালীঘাট, চোর সন্দেহে হাত-পা বেঁধে গণধোলাইয়ে মৃত যুবক appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:05 AM Mar 25, 2019Updated: 09:16 AM Mar 25, 2019

অর্ণব আইচ: ফের চোর সন্দেহে যুবককে মারধরের অভিযোগ শহরে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের। জানা গিয়েছে, শনিবার রাত আড়াইটে থেকে কালীঘাট এলাকায় এক যুবককে মারধর শুরু করে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা। শঙ্কর মণ্ডল (২৫) নামে ওই যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মোবাইল চুরি করেছেন। 

Advertisement

ঘটনার প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর রবিবার সকালে একটি শপিং মলের কাছে গাছ তলায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায় যুবককে। ওই অবস্থাতেও তাঁকে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে কালীঘাট থানার পুলিশ ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা  তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে, শপিং মল থেকে গণধোলাইয়ের কয়েক সেকেন্ডের একটি ফুটেজ পুলিশের হাতে আসে। সেটির ভিত্তিতেই পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

[আরও পড়ুন:  অভিষেকের স্ত্রীর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি সুজনের]

ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাত, পা-সহ দেহের কিছু জায়গায় আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। কিন্তু যে আঘাতগুলো রয়েছে, সেগুলি সরাসরি মৃত্যুর কারণ নয়। দেহের অভ্যন্তরীণ আঘাতের বিষয়েও নিশ্চিত নন চিকিৎসকরা। যুবককে যখন উদ্ধার করা হয়, তখন তাঁর মুখ থেকে ফেনা বের হচ্ছিল। তাই যুবকের ভিসেরা ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে। ভিসেরার রিপোর্ট পাওয়ার পর বোঝা যাবে, কোনও বিষাক্ত কিছু তাঁকে খাওয়ানো হয়েছিল কি না। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকেই অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করা হবে।

পুলিশ ও এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত শঙ্কর মণ্ডলের বাড়ি টালিগঞ্জের মসজিদ এলাকায়। মাদকাসক্ত ওই যুবক মূলত কালীঘাট ও টালিগঞ্জ এলাকায় ঘুরে বেড়াতেন। নেশার জন্য টাকা জোগাড় করার জন্য তিনি মোবাইল চুরি করতেন বলে এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ। শনিবার রাতেও তিনি এলাকার এক ব্যক্তির মোবাইল চুরির অভিযোগ তোলেন এলাকার বাসিন্দা বাবু, ‘কানাইয়া ছেলে’ নামে দুই যুবক। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় এক মহিলা ও আরও জনা কয়েক যুবক। তাদের মধ্যে কয়েকজন আবার বহিরাগত।

জানা গিয়েছে, কালীঘাট এলাকার গুরুপদ হালদার রোড ও শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডের সংযোগস্থলের কাছে ফুটপাথের উপর রাত দু’টো নাগাদ শঙ্করকে ডাকা হয়। এলাকার দুই যুবক শম্ভু ও অর্জুন ঘুম থেকে উঠে দেখেন, শঙ্করকে মোবাইল ফেরত দিতে বলা হচ্ছে। কিন্তু শঙ্কর মোবাইল চুরির বিষয়টি অস্বীকার করছেন। অভিযোগ, এরপরই তাঁকে মারধর শুরু করে অভিযুক্তরা। ওই শপিং মলের এক নিরাপত্তারক্ষী জানান, তিনি এক যুবকের আর্তনাদ শুনতে পেয়েছিলেন।

[আরও পড়ুন: গবাদি পশুর জন্য পুষ্টিকর খাবার চাই, ভোটের মরশুমে দাবি বীরভূমের এই গ্রামের]

শঙ্করের মা মঙ্গলা মণ্ডলের অভিযোগ, গভীর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দফায় দফায় শঙ্করকে মারধর করা হয়। আক্রান্তের দিদি জানিয়েছেন, দফায় দফায় তাঁর ভাইকে মারধর করা হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় রবিবার সকালে কোনওক্রমে কালীঘাট পার্কের কাছে একটি চায়ের দোকানে যান শঙ্কর। অভিযোগ, সেখান থেকে সাফাইকর্মীদের ব্যবহার করা একটি গাড়িতে করে শঙ্করকে ফের সেই শপিং মলের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গাছের সঙ্গে কাপড়ের দড়ি তাঁকে বেঁধে ফের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ পরিবারের। যদিও পুলিশের দাবি, গাছের সঙ্গে তাঁকে বেঁধে রাখা হয়নি।

যদিও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তাঁরা যুবককে গাছের নিচে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পেয়েই কালীঘাট থানায় খবর দেন।  গিয়েছে, বাবু নামে যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ উঠেছে, তার একটি দোকান রয়েছএ ওই এলাকায়। বাকি অভিযুক্তরা তারই বন্ধু। এলাকার বাসিন্দারা জানান, বাবুদের অভিযোগ ছিল, তাঁর বন্ধুর কাছ থেকে মোবাইল চুরি করে বিক্রি করেন শঙ্কর। পালিয়ে কালীঘাটে আসার পরই তাঁকে ধরা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য অভিযুক্তদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

The post দমদমের পর কালীঘাট, চোর সন্দেহে হাত-পা বেঁধে গণধোলাইয়ে মৃত যুবক appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement