shono
Advertisement

গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর গড়ে প্রচারে অনীহা আপ-কংগ্রেসের! তবু সর্বশক্তি দিয়ে ভোটযুদ্ধে বিজেপি

প্যাটেল সম্প্রদায়ের ভোট নিয়ে চিন্তিত ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেল।
Posted: 08:45 PM Dec 01, 2022Updated: 09:36 PM Dec 01, 2022

বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, আমেদাবাদ: বিরোধীদের গা ছাড়া মনোভাব। প্রচারে অনীহা। ফলে ভোটযুদ্ধে কার্যত ওয়াকওভার পাচ্ছেন ষাট পেরনো যুবক। জয় নিয়ে অনিশ্চিয়তা নেই। তাও প্রচারে কোনও ফাঁক রাখতে চান না। উদয়অস্ত পরিশ্রম করছেন ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেল (Bhupendra Bhai Patel)। মোদি গড়ের মুখ্যমন্ত্রী। আর বয়সে নবীন হয়েও দৌড়ে পিছিয়ে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কংগ্রেসের (Congress) রাজ্যসভার সাংসদ আমেবেন ইয়াগনিক ও আম আদমী পার্টির (Aam Aadmi Party) বিজয় প্যাটেল। পেশায় সাংবাদিক। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর একটাই চিন্তা। প্যাটেল সম্প্রদায়ের ভোট। আপের প্রার্থীও যে প্যাটেল সম্প্রদায়ের। প্যাটেল ভোটে কতটা ভাগ বসায় তার ওপর নির্ভর করছে প্রথম ও দ্বিতীয়র ব্যবধান। তবে এবার মুখ্যমন্ত্রীকে রেকর্ড ভোটে জেতানোর পন করেছেন স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখ রক্ষাই চ্যালেঞ্জ ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেলের।

Advertisement

আমেদাবাদ (Ahmedabad) শহর ও শহর সংলগ্ন গ্রামীন এলাকা নিয়ে গাটলোড়িয়া বিধানসভা। আমেদাবাদ ছেড়ে গ্রামীন এলাকায় গেলেই মালুম হবে এখানের জমি অনুর্বর। চাষবাস তেমন হয় না। মূলত ব্যবসা এখানকার ভোটারদের পেশা। এছাড়াও রয়েছে কিছু ছোট ও মাঝারি শিল্প। তবে সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা এলাকায় শিক্ষার হার রাজ্যের অন্য বিধানসভা কেন্দ্র থেকে এগিয়ে। শহর ও গ্রামীণ এলাকায় মাথা তুলেছে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষার হারে এগিয়ে থাকা ও ব্যবসা মূল পেশা হওয়ায় গাটলোড়িয়ায় দারিদ্র তুলনামূলক কম। আর মুখ্যমন্ত্রী হতেই নিজের বিধানসভা এলাকার উন্নয়নে যে অতিরিক্ত জোর দিয়েছেন শহর ছেড়ে গ্রামে গেলেই তা মালুম হয়। কাঁচা রাস্তা পাকা হয়েছে। গ্রামের মানুষ আবাস যোজনায় ঘর পেয়েছে। এছাড়াও সবচেয়ে বেশি নজর দিয়েছেন কর্ম সংস্থানে।

[আরও পড়ুন: ঘোষিত আইসিএসই ও আইএসসি পরীক্ষার সূচি, করোনার আগের নিয়মেই মূল্যায়ন]

কেকে নগর, প্রভাত গাঁও, গাটলোড়িয়া গাঁওয়ে একটু ঘুরলেই বোঝা যায়। সদ্য গজিয়ে ওঠা ছোট ও মাঝারি শিল্প মাথা তুলেছে মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা এলাকায়। প্রভাত গাঁওয়ের বাসীন্দা নিশান প্যাটেল বেশ গর্বের সঙ্গে জানান, কাজের খোঁজে গ্রামের বাইরে যেতে হয়নি। গবাড়ির কাছে কাপড়ের ব্যাগ তৈরির কারখানায় কাজ পেয়েছেন। ভূপেন্দ্রভাই ফের মুখ্যমন্ত্রী হলে এলাকার মানুষের ‘সোনায় সোহাগা’ হবে বলেই মনে করেন। মোদিজি (PM Narendra Modi) , অমিত শাহরা পাশে রয়েছেন। তাই ভাজপা ক্ষমতায় এলে ভূপেন্দ্রভাই ফের মুখ্যমন্ত্রী হবেন এই বিষয়ে কোনও সংশয় নেই। একমত কেকে নগরের প্রবীণ ঠাকুর, রমেশ প্যাটেল, সতীশ খাট্টারিয়ারা। গোটা গাটলোড়িয়া জুড়ে শুধুই মোদি, শাহ, নাড্ডা ও ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেলের ছবি দেওয়া আকাশচুম্বি হোর্ডিং।

[আরও পড়ুন: ভারত জোড়ো যাত্রায় রাহুলের পাশে স্বরা ভাস্কর, হাতে তুলে দিলেন লাল গোলাপ]

প্রচারে অনেক যোজন পিছিয়ে কংগ্রেস (Congress) ও আপ। এমনিতে এই কেন্দ্রে বিরোধী প্রার্থীরা ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেলের তুলনায় ধারেভারে অনেক পিছিয়ে। রাজ্যসভার সাংসদ হওয়ার কারণে কংগ্রেস প্রার্থী আমেবেন ইয়াগনিক পরিচিত মুখ হলেও আপের বিজয় প্যাটেল এলাকায় অপরিচিত মুখ। প্রার্থীদের সমর্থনে কিছু হোর্ডিং ও পোস্টার চোখে পরলেও মুখ্যমন্ত্রীর প্রচারের ধারেকাছে নেই। তাও চিন্তায় গেরুয়া শিবির। কারণ এই বিধানসভা এলাকার ৫৪ শতাংশ প্যাটেল সম্প্রদায়। মুখ্যমন্ত্রী নিজে প্যাটেল সম্প্রদায়ের হওয়ায় জয় নিয়ে সংশয় থাকত না। যদি না আপ প্রার্থীও একই সম্প্রদায়ের না হতেন। আপের বিজয় প্যাটেল তাঁদের ভোটে ভাগ বসাবে বলে স্বীকার করে নিলেন স্থানীয় বিজেপি (BJP) নেতা রণবীর প্যাটেল। সেক্ষেত্রে অমিত শাহর ঘোষণা মতো মুখ্যমন্ত্রীকে রেকর্ড ভোটের ব্যবধানে জিতিয়ে আনা কঠিন হবে বলে মনে করছেন বিজেপির নেতা কর্মীরা।

সাইকেলের পিছনে গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে অভিনব প্রচার কংগ্রেসের।

এদিকে বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ চলাকালীন ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠল আমরেলি কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী পরেশ ধানানির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ভোটারদের প্রভাবিত করতে সাইকেলের পিছনে গ্যাস সিলিন্ডার বেধে ঘুরে বেরাচ্ছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে থাকা কর্মীরাও সাইকেলের পিছনে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, দুর্নীতি, মোরবির সেতু দুর্ঘটনার বিষয় নিয়ে পোস্টার লাগিয়ে বুথে বুথে ঘুরছিল। বিষয়টি জানাজানি হতেই বিজেপির তরফে কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়। অভিযোগ পেয়েই প্রার্থীর সাইকেল থেকে গ্যাস সিলিন্ডার খুলে নেওয়ার নির্দেশ দেয় কমিশন। যদিও কোনও অন্যায় করেননি বলে দাবি পরেশ ধানানির। তাঁর যুক্তি, মোদি জমানার জ্বলন্ত সমস্যা নিয়ে বুথে গিয়েছিলাম। ভোটের দিন বলে মানুষ এই সমস্যা থেকে মুক্ত নয়। আজও ভোটগ্রহণ চলাকালীন ১ হাজার টাকায় গ্যাস কিনতে হয়েছে। তাই সাইকেলের পিছনে গ্যাস সিলিন্ডার বেধে ঘুরছিলেন। আর কমিশন কোথাও বলেনি যে ভোটের দিন সাইকেলে গ্যাস সিলিন্ডার বাধা যাবে না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement