সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক : “যদি মমতা ব্যানার্জী এসে কত্থক নাচ করতে থাকেন, তো কে শুনবে ওকে ?” উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের সিকান্দাবাদে একটি জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে এই মন্তব্যই করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মহেশ শর্মা। তবে শুধু মমতাই নন, বক্তব্যের সময় কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ও কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর সম্পর্কেও ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করেন গোমতী নগরের সাংসদ। তাঁর ওই বক্তব্যের ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক দেখা দিয়ে দেশের রাজনৈতিক মহলে। নির্বাচন কমিশনেও অভিযোগ দায়ের করার কথা ভাবা হচ্ছে৷
[দিল্লির মসনদে মোদিকে পৌঁছে দিয়েছিলেন বন্ধু পারিকরই]
গত রবিবার সিকান্দাবাদে একটি জনসভা করতে গিয়েছিলেন পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের বিদায়ী রাষ্ট্রমন্ত্রী মহেশ শর্মা। সেখানে গিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূয়সী প্রশংসা করার পাশাপাশি বিরোধী নেতৃবৃন্দের কড়া সমালোচনা করেন। আর কটাক্ষ করতে গিয়ে ভাষা প্রয়োগে তিনি ছাড়িয়েছেন শালীনতার সীমা৷ তাঁর কথায়, “যদি মমতা ব্যানার্জি এখানে এসে কত্থক নাচ করেন তো কী হবে? কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী যদি গান করেন তো, কে শুনবেন? ৭২টি আসন নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন, ২০০ আসন আসবে কোথা থেকে? আপনারাই বলুন মজবুত সরকার চান কি না ? ওরা আবার বলছেন পাপ্পুর সঙ্গে থাকবেন। যেদিন পাপ্পু সংসদে চোখ মেরেছিলেন, সেদিন আমি মোদিজির পিছনে বসেছিলাম। ওনার চোখ মারার জেরে আমিই ঘায়েল হয়ে গিয়েছিলাম। আসলে পাপ্পু এখনও পাপ্পুই রয়ে গেল।’’ মহেশ শর্মার আরও কটাক্ষ, ‘‘ বলছে প্রধানমন্ত্রী হব। মায়াবতী, অখিলেশ, রাহুল-সহ বাকিরা সবাই প্রধানমন্ত্রী হতে চাইছেন। এখন তো আবার পাপ্পুর পাপ্পি প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এসে গেছেন। ওনাকে নিয়ে এমন করা হচ্ছে যে উনি যেন এতদিন ছিলেন না। উনি কি এতদিন দেশের মেয়ে ছিলেন না? নতুন কী এনেছেন উনি? এতদিন ধরে তো ওদের পরিবারের লোকরাই ছিল। নেহরুর পর রাজীব গান্ধী, সঞ্জয় গান্ধী আর এখন রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এতদিন ধরে ক্ষমতায় থেকেও দেশের জন্য কী করেছেন ওনারা। আজ এদের থেকে উপরে উঠে দেখতে গেলে দেখবেন আমাদের বব্বর শের নরেন্দ্র মোদি দাঁড়িয়ে আছেন।”
[দেশের শীর্ষপদে বঙ্গসন্তান, ভারতের প্রথম লোকপাল পিনাকীচন্দ্র ঘোষ]
তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও বিতর্কিত মন্তব্য করে দলের সমস্যা বাড়িয়েছেন এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। গত বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের ভজন লাল মন্দিরে আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “সবথেকে বড় বোকা হল ভগবান। যখন ভগবান আমাদের এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন তখন আমাদের খাবার, পোশাক, বাসস্থান, কর্মসংস্থান ও সন্তানদের শিক্ষার দায়িত্ব তাঁরই। এমনকী আজকের দিনেও পূর্ব উত্তরপ্রদেশের বালিয়া-সহ অন্য জেলাগুলোর প্রচুর মানুষ দুবেলা ঠিক করে খেতে পান না। ওই এলাকার শিশুরা যারা স্কুলে যায় তারা মিড-ডে মিল খেয়ে পেট ভরায় আর বাকিদের দিন কাটে খালি পেটেই। যেখানে আমাদের সৃষ্টিকর্তা ভগবান আপনাদের আশা-আকাঙ্খা পূরণ করতে পারছেন না সেখানে সাংসদ কী করবে ?”
ফের সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন পাকিস্তানের, শহিদ ১ ভারতীয় সেনা
তার আগে আগ্রাতে একটি জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন, “মহিলাদের আঁটসাট ড্রেস বা স্কার্ট পরে রাতবিরেতে একা একা নির্জন জায়গায় যাওয়াটা নিরাপদ নয়।” সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হলে তাঁর সাফাই ছিল, “এটা ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নয়, নেহাতই পরামর্শ।” আর এবার নির্বাচনী প্রচারে বিরোধীদের নিয়ে মহেশ শর্মার বক্তব্য একেবারে নজিরবাহিনী বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ৷
The post মমতাকে ‘নর্তকী’ বলে নজিরবিহীন ভাষায় আক্রমণ, প্রবল বিতর্কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী appeared first on Sangbad Pratidin.