সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস-এই কারণ দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ক্রমেই বাড়ছে। আর সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের মতে, কোনও প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাকে বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঠকানো হয়েছে সেটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। বর্তমানে সামাজিক মূল্যবোধ যেভাবে বদলাচ্ছে, সেটা মাথায় রেখেই এ ধরনের মামলা দায়ের করা উচিত নয় বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এমএম সুন্দ্রেশ এবং রাজেশ বিন্দালের এজলাসে শুরু হয় শুনানি। সেখানে তরুণীর আইনজীবী জানান, দেখাশোনা করে বিয়ে স্থির করা হয় তাঁর মক্কেলের। বাগদানও হয়ে গিয়েছিল। তরুণীর নাকি মনে হয়েছিল, শারীরিক সম্পর্ক না করলে নাকি অভিযুক্ত তরুণ বিয়েতে রাজি হবেন না। তাই দুজনে শারীরিক সম্পর্কে জড়ান। তরুণীর আইনজীবীর সওয়াল, আর পাঁচটা প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার সঙ্গে এই মামলাকে একসারিতে বসানো যায় না। কারণ এটা দেখাশোনা করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই পরিবার। সেই বাগদান ভেঙে গেলে সেটাও যথেষ্ট সম্মানহানি ঘটাবে।
যদিও শীর্ষ আদালতে ধোপে টেকেনি এই যুক্তি। দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, “আপনি যদি এতই সরল হতেন, তা হলে আমাদের কাছে আসতেন না। আপনি প্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন। আপনাকে ঠকিয়ে বিশ্বাস করানো হয়েছে যে আপনার সঙ্গে বিয়ে হবে, এটি হতে পারে না। সবার প্রতি যথাযথ সম্মান রেখে আমরা বলতে পারি যে বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নৈতিকতার ধারণা আলাদা। যদি এই যুক্তি মেনে নিই তাহলে তো এখন কলেজপড়ুয়া ছেলেমেয়েদের সম্পর্কগুলো প্রত্যেকটাই দণ্ডনীয় অপরাধ।”
শীর্ষ আদালতের মতে, সমাজে এখনও বহু শূন্যতা রয়েছে। রক্ষণশীল মানসিকতা থেকে এখনও বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের মতো অভিযোগ দায়ের হয়। আর সেখানে কাঠগড়ায় তোলা হয় পুরুষদেরই। কিন্তু আদালতের কাজ দুপক্ষের যুক্তি সমানভাবে বিচার করা। কারণ আদালত কোনও একটি লিঙ্গের প্রতি পক্ষপাত করে না। তবে অভিযোগকারী তরুণী যে হেনস্তার শিকার হয়েছেন সেটা মেনে নিয়েছে শীর্ষ আদালত। তাই অভিযোগ খারিজ না করে পরবর্তী সময়ে অভিযুক্ত তরুণের বয়ান শুনবেন দুই বিচারপতি।