সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১১ মাস পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ থামেনি গাজায়। হামাস নিধনে গোটা গাজা ভূখণ্ড গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইজরায়েল। ইহুদি দেশটির 'মারে' কোণঠাসা প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠনটি। বহুদিন ধরেই যুদ্ধবিরতির পথে হাঁটতে চাইছে হামাস। এবার সংঘাত থামাতে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর উপর চাপ বাড়াতে আমেরিকার কাছে আর্জি জানিয়েছে তারা। হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, "আর অন্ধ হয়ে থাকবেন না। এবার ইজরায়েলের উপর চাপ সৃষ্টি করুন।"
গাজায় যুদ্ধ থামানোর জন্য মধ্যস্থতা করছে সৌদি আরব, মিশর, কাতারের মতো দেশ। উদ্যোগী হয়েছে আমেরিকাও। প্রতিনিয়ত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে ওয়াশিংটন। একাধিকবার কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত শান্তি বৈঠকে যোগ দিয়েছে হামাস ও ইজরায়েলের প্রতিনিধিরা। কিন্তু কোনওবারই যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মত হতে পারেনি দুপক্ষ। কারণ পণবন্দিদের মুক্তি নিয়ে একাধিক শর্ত চাপিয়েছে হামাস। যা মেনে নেয়নি তেল আভিভ। এখনও নিজের সিদ্ধান্তেই অনড় রয়েছেন নেতানিয়াহু। এখন তাঁকে অবস্থান থেকে টলাতে আমেরিকার কাছে দরবার করছে হামাস।
[আরও পড়ুন: কমলা হ্যারিসের হাসিতে মুগ্ধ! ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট দেখতে চান পুতিন]
দিন দুয়েক আগেই দোহায় অনুষ্ঠিত হয়েছে শান্তি বৈঠক। সেখানে উপস্থিত ছিল কাতারে থাকা হামাসের প্রতিনিধি খলিল আল হাইয়া। সংবাদমাধ্যমে সে জানিয়েছে, "নেতানিয়াহু চুক্তিতে সম্মত হননি। এবার আমেরিকার উচিত আর ইজরায়েলের পক্ষে না থাকা। অন্ধ হয়ে থাকা বন্ধ করুন। যুদ্ধবিরতি নিয়ে চাপ বাড়ান নেতানিয়াহুর উপর। এটা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা চুক্তির খুব কাছেই ছিলাম।" প্রসঙ্গত, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে 'বন্ধু' ইজরায়েলের পাশে থাকলেও গাজায় প্যালেস্তিনীয়দের মৃত্যু নিয়ে সরব আমেরিকা। সম্প্রতি তেল আভিভকে অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করে দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। মৃত্যুমিছিল রুখতে তৎপর তারা। এখন প্রশ্ন, ওয়াশিংটনের চাপে কি যুদ্ধবিরতির পথে হাঁটবে ইজরায়েল? গাজায় ইজরায়েলি সেনার রক্তক্ষয়ী অভিযানে ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা ৪০ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে।
এদিকে, যত দিন যাচ্ছে আরও দীর্ঘ হচ্ছে গাজায় থাকা পণবন্দি ঘরে ফেরার অপেক্ষা। গত ১১ মাস ধরে তাঁরা হামাসের ডেরায় বন্দি। যা নিয়ে প্রতিনিয়ত ইজরায়েলের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। এর মাঝেই ফের গাজা থেকে ৬ পণবন্দির দেহ উদ্ধার করেছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)। তাদের অভিযোগ, ওই ৬ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে হামাস জঙ্গিরা। এর পরই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ইজরায়েলের একাধিক শহর। পণবন্দিদের মত্যু নিয়ে সকলের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন নেতানিয়াহু। নিজের দেশেই ক্রমাগত চাপ বাড়ছে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর উপর।