সুদীপ রায়চৌধুরী: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অশালীন আক্রমণের জেরে এবার বিপদ বাড়ল তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। তৃণমূলের তরফে অভিযোগ দায়ের করার পরই অভিজিৎকে শোকজ করল নির্বাচন কমিশন। ২০ মে অর্থাৎ আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে এই শোকজ নোটিশে জবাব দিতে বলা হয়েছে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে।
মুখ্যমন্ত্রীকে কুরুচিকর মন্তব্যের জন্য প্রাক্তন বিচারপতিকে কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশে বিজেপি প্রার্থী যে মন্তব্য করেছেন তা অত্যন্ত আপত্তিকর, শালীনতার সীমালঙ্ঘনকারী এবং কুরুচিকর। এই ধরনের মন্তব্য আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনেরই সামিল। পাশাপাশি, বলা হয় আগামী ২০ মে এর মধ্যে কমিশনের পাঠানো শোকজ নোটিসের জবাব দিতে হবে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে। যদি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তিনি কমিশনের চিঠির জবাব না দেন, সেক্ষেত্রে কমিশনের তরফে ধরে নেওয়া হবে তাঁর কোনও বক্তব্য নেই সেক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী অভিজিতের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে কমিশন।
গত ১৫ মে হলদিয়ায় এক জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশে অভিজিৎ বলেন, "রেখা পাত্র গরিব মানুষ লোকের বাড়িতে কাজ করে খায়, আমাদের প্রার্থী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সুন্দরী নন, একটু বেশি সুন্দরী। সেই জন্য রেখা পাত্রকে ২ হাজার টাকায় কেনা যায়। একজন মহিলা আরেক জন মহিলা সম্পর্কে কী করে এই উক্তি করতে পারেন আমরা ভাবতেও পারি না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলা তো! আমার মনে প্রশ্ন জাগে মাঝে মাঝে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুমি কত টাকায় বিক্রি হও? তোমার হাতে তো ৮ লাখ টাকা গুঁজে দিলে একটা চাকরি দাও। তোমার হাতে ১০ লাখ টাকা গুঁজে দেয় এবং দিয়ে রেশন হাওয়া করে দেয় অন্য দেশে। ভারতবর্ষেই থাকে না সেই রেশন। তো তোমার দাম ১০ লাখ টাকা কেন?" অভিজিতের মন্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার সকালেই তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের দাবিতে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল শাসকদল।
[আরও পড়ুন: স্কুল থেকে উদ্ধার তিন বছরের শিশুর দেহ, বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ পাটনা]
নির্বাচন কমিশনকে লেখা অভিযোগপত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ‘ভারতীয় দণ্ডবিধি লঙ্ঘন করায়’ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রুজু করা হোক। সেইসঙ্গে, দলের তরফে আরও দাবি করা হয়, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সবরকমের নির্বাচনী প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হোক। তিনি যেন কোনও জনসভা বা পদযাত্রা করতে না পারেন। পাশাপাশি, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়-সহ সমস্ত বিজেপি নেতা যেন এই ধরনের ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং আপত্তিকর ও অবমাননাকর মন্তব্য’ করা থেকে বিরত থাকেন সেটাও জানানো হয় চিঠিতে। তৃণমূলের অভিযোগের পরই এবার শোকজ নোটিস পাঠানো হল তমলুকের বিজেপি প্রার্থীকে।