সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ৩০ দিন পূর্ণ করল ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচি। বাঁকুড়া ছেড়ে পুরুলিয়ায় ঢুকলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সেখানেও জনজোয়ারে ভাসলেন তিনি। তাঁকে দেখতে দূর থেকে ছুটে এলেন বিশেষভাবে সক্ষম যুবকও। তাঁকে খালি হাতে ফেরাননি অভিষেক। মাটিতে বসে তাঁর সমস্ত কথা শোনেন তিনি। আশ্বাসও দেন সমস্যা সমাধানের। জনসংযোগের পাশাপাশি বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া, দুই জেলার দলীয় নেতৃত্বকে কড়া বার্তা দেন অভিষেক। নিজেদের সমস্যা মিটিয়ে দ্রুত বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচারের নামার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বুধবার সকালে বাঁকুড়ার কমলপুরে নেতাজি হাই স্কুলের মাঠের ক্যাম্প থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দেন, “২৪ ঘণ্টার মধ্য়ে বিবাদ মিটিয়ে বিজেপির প্রতিরোধে নামুন।” নিজেদের মধ্যে সমস্যা না মেটালে শীর্ষ নেতৃত্ব কড়া ব্যবস্থা নেবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন অভিষেক। পুরুলিয়ার নেতৃত্বের জন্য একই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায় উল্লেখযোগ্য ভাল ফল করতে পারেনি তৃণমূল। এবার পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে সেই ফলাফলের পুনরাবৃত্তি আটকাতে চায় তৃণমূল। নিজেদের বিবাদ মিটিয়ে দ্রুত বিজেপির বিরুদ্ধে মাঠে নামার বার্তা দিয়ে রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্ভরযোগ্য সেনাপতি।
[আরও পড়ুন: গরু পাচার মামলায় অনুব্রত-সুকন্যার সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ED’র, কার্যত দেউলিয়া মণ্ডল পরিবার]
বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ কাশীপুরের কল্লোলী এলাকায় ঢোকেন অভিষেক। এদিন ৩০ দিনে পা দিল তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচি। গত ২৫ এপ্রিল দিনহাটা থেকে কর্মসূচি শুরু করেছিলেন তিনি। মাঝে সিবিআইয়ের ডাকে কলকাতায় ফিরলেও বাকি সময়টা কাটিয়েছেন জেলায়-জেলায়। রাস্তায়। কাশীপুরে কিছু মেয়ে ফুটবল খেলেন। এদিন ফুটবল নিয়ে হাজির হয়েছিলেন তাঁরা। অভিষেকের কাছে সিভিক ভলান্টিয়ার্সের চাকরির আরজি জানান তাঁরা। যাতে পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি খেলাও চালিয়ে যেতে পারেন। কাশীপুর ব্লকের ধানার গ্রামের বাসিন্দা রজনী বাউড়ি, শিউলি বাউড়িরা জানিয়েছেন, দাদার কাছে চাকরির আরজি জানিয়েছি। বিষয়টি তিনি দেখবেন বলেছেন।”
অভিষেককে দেখতে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরের মানবাজার থেকে ছুটে এসেছিলেন দিব্যাঙ্গ যুবক ঈশ্বরচন্দ্র বাউড়ি। চেয়ারে বসেছিলেন তিনি। বিশেষভাবে সক্ষম যুবককে দেখে হাটু গেঁড়ে মাটিতে বসে পড়েন অভিষেক। মনোযোগ দিয়ে শোনেন তাঁর কথা। ঈশ্বরচন্দ্র বলেন, “শুনেছিলাম কর্মসূচিতে পুরুলিয়া আসছেন। মানবাজারেও যাবেন অভিষেক। কিন্তু একদিনও অপেক্ষা করতে পারিনি। একটা কাজের খুব দরকার। তাই দাদার কাছে কাজের আরজি জানালাম।” অভিষেকের আপ্ত সহায়ক তাঁর ফোন নম্বর নেন। দ্রুত চাকরির আশ্বাসও দিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকে ফেল করেও প্রাথমিকে চাকরি! পর্ষদের তালিকা ঘিরে শোরগোল]
সেখান থেকে বেরিয়ে লোকশিল্পীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সেখানে ধামসা, মাদল বাজান তিনি। ছৌ শিল্পীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। রাতে পুরুলিয়া শহরের উপকণ্ঠে শিমুলিয়ায় অধিবেশন সারবেন তিনি। সেখানে যাওয়ার পথে কুড়মিরা তাঁর কনভয়কে লক্ষ্য করে স্লোগান দিতে থাকেন। তবে কনভয় আটকায়নি।