সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাবালিকা কন্যাকে কুরুচিকর ভাষায় হুমকি মামলায় গ্রেপ্তারে দুই মহিলাকে পুলিশ হেফাজতে অত্যাচারের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সিবিআই তদন্তের আর্জি খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত। তার বদলে তিন সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল বা SIT তৈরি করে দেওয়া হল। পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের ভিনরাজ্যের তিন আইপিএসকে নিয়ে সিট গড়া হয়েছে। তিন সদস্যের সিটের নেতৃত্বে থাকবেন ডিআইজি, প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ আকাশ মাঘারিয়া। বাকি দুই সদস্য আইপিএস স্বাতী ভাঙ্গারিয়া এবং সুজাতা কুমারী বীণাপাণি। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, হাই কোর্টের নজরদারিতে চলবে তদন্ত। প্রতি সপ্তাহে হাই কোর্টে তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট জমা দিতে হবে। পাশাপাশি, তদন্তের অগ্রগতি বিবেচনা করার জন্য এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা দেওয়ার জন্য কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে বিশেষ বেঞ্চ গঠনের নির্দেশও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং উজ্জ্বল ভূঁইঞার এজলাসে এই মামলার শুনানি ছিল। রাজ্যের আবেদনে সাড়া দিয়ে বিচারপতিরা সিবিআই তদন্ত নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ খারিজ করে দেন। বিচারপতি সূর্যকান্তর পর্যবেক্ষণ, এক্ষেত্রে সিবিআইয়ের মতো দেশের সর্বোচ্চ তদন্তকারী সংস্থার উপর অপ্রয়োজনীয় বোঝা চাপানো হচ্ছে। এই নির্দেশের সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। এমন একটা বার্তা যাচ্ছে যে রাজ্যের পুলিশ আধিকারিকরা এই ধরনের তদন্ত করার ক্ষেত্রে যোগ্য নন। তাঁদের মনোবল এক্ষেত্রে ধাক্কা খাবে। তাই রাজ্যের পুলিশকর্তাদের নিয়ে সিট গড়ে তাঁদের তদন্তের সুযোগ দেওয়া হল। সেক্ষেত্রে নির্যাতিতারাও নিজেদের নিরাপত্তার জন্য সিটের দ্বারস্থ হতে পারবেন। তবে তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে সিটকে।
আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার প্রতিবাদ চলাকালীন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নাবালিকা কন্যার উদ্দেশে কুরুচিকর ভাষায় হুমকি দেওয়া হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে ডায়মন্ড হারবার থেকে দুই মহিলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। হেফাজতে থাকাকালীন তাঁদের মারধরের অভিযোগ ওঠে। সেই মামলায় হাই কোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তার বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। বিচারপতিরা আগেই এবিষয়ে রাজ্য়ের ক্যাডার অথচ ভিনরাজ্যের আইপিএস অফিসারদের নামপ্রস্তাব করতে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাজ্য কয়েকজন আইপিএসের নাম প্রস্তাব করে। সেখান থেকে তিনজনকে বেছে সিট গঠন করে তদন্তভার দিল সুপ্রিম কোর্ট।