সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary) মন্ত্রিসভা ছাড়ার পর শাসকদলও কার্যত তাঁকে ছেঁটে ফেলার পথেই হেঁটেছে। শুক্রবার তাঁর ইস্তফাপত্র পাওয়ার পর বিকেলেই জরুরি বৈঠকে দলের ৫ নেতার উপর বাড়তি দায়িত্ব দিয়ে পুরোদমে ভোটপ্রচারে নামিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার নিজের সংসদীয় কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের সাতগাছিয়ার মুচিশা হাইস্কুল মাঠ থেকে প্রচার শুরু করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। আর শুরু থেকেই সুর সপ্তমে চড়ালেন তিনি। নাম না করেই শুভেন্দু অধিকারীকে বিঁধলেন তীব্র আক্রমণে।
অভিষেকের সভা শুরু থেকেই নজর ছিল, তিনি শুভেন্দুর প্রতি কী বার্তা দেন সেদিকে। প্রত্যাশামতোই বজবজের সভায় নাম না করেই পদত্যাগী মন্ত্রীকে একাধিক কটাক্ষে বিঁধলেন সাংসদ। সেই সঙ্গে জবাব দিলেন তাঁর দিকে ধেয়ে আসা একাধিক কটূক্তিরও। শুভেন্দুর ‘লিফটেও উঠিনি, প্যারাশুটেও নামিনি’ কটাক্ষের উত্তরে জনতার প্রতি অভিষেকের পালটা প্রশ্ন, ”আপনারা যাঁরা এখানে আছেন, ক’জন লিফটে উঠেছেন? ক’জন প্যারাশুটে নেমেছেন বলুন তো? তৃণমূল কংগ্রেস মানে মাটির দল, এখানে কেউ লিফটে উপরে উঠলে, তার পতন অবশ্যম্ভাবী। আর লিফটে ওঠানামা করলে আমিও ৩৫টি পদের ‘অধিকারী’ হতে পারতাম। প্যারাশুটে নামলে দক্ষিণ কলকাতার ভোটে লড়তাম।”
[আরও পড়ুন: রাজ্যের বেকারত্বের বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদ বিজেপি নেতার, রাস্তায় বসেই ভাজলেন চপ!]
এরপর তিনি আক্রমণের সুর আরও চড়িয়ে বলেন, ”দল মানে মা। এই দলের মা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই দলটাকে সবরকমভাবে বাড়িয়ে তুলেছেন। তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা মানে মায়ের সঙ্গে বেইমানি। কেউ মায়ের সঙ্গে বেইমানি করলে তাঁকে কি আপনারা ছেড়ে কথা বলবেন? কেউ যদি নিজের স্বার্থে মেরুদণ্ড বেঁকিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলের তাঁবেদারি করেন, ছেড়ে কথা বলবেন? কখনওই বলবেন না।”
এই সভা থেকে বিজেপিকেও তীব্র স্বরে বিঁধলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দিলেন ‘ভাইপো’ আক্রমণের জবাবও। বললেন, ”নাম নেওয়ার মতো বুকের পাটা প্রধানমন্ত্রীরও নেই, তাই ভাইপো বলেই বারবার আক্রমণ করেন। বিজেপির সকলের আক্রমণের কেন্দ্রে এখন এই ভাইপোই। আমি তো নাম করেই বলছি, দিলীপ ঘোষ গুণ্ডা, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সুনীল দেওধর সবাই বহিরাগত।” এরপর তিনি হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ”যে যখন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে, তাঁকেই হাই কোর্ট পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়েছি। সবসময় আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছি।”
[আরও পড়ুন: ওপেন বুক পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিয়েও সবাই ফেল! আজব কাণ্ড মালদহের ডিএলএড কলেজে]
একুশে ফের তৃণমূলই ফিরবে, এই আত্মবিশ্বাসী সুরে সভা শেষের সময় অভিষেক ছন্দে ছন্দে বললেন, ”পদ নয়, পতাকা/ নেত্রীর নাম মমতা/ বলছে বাংলার জনতা/ নবান্নে আবার মমতা”। সবমিলিয়ে, একুশে প্রচারের শুরু থেকেই যে তৃণমূলকে এমন রণং দেহি অবতারেই দেখা যাবে, তা স্পষ্ট করে দিলেন অভিষেক।