সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদার পুনরাবৃত্তি নদিয়ার চাকদহে। জনসংযোগ বজায় না রাখায় ফের পঞ্চায়েত প্রধানকে ইস্তফার নির্দেশ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আগামী সোমবার সকালের মধ্যে ইস্তফাপত্র জমা দিতে হবে। রানাঘাটের মিলন মন্দির ময়দানের জনসভার মঞ্চ থেকে কড়া বার্তা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের।
শনিবার জনসভা চলাকালীন নদিয়ার চাকদহের তাতলা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের মহানলা গ্রামের ধনিচার প্রধান পার্থপ্রতীম দে’র খোঁজ শুরু করেন। তিনি জনসভায় উপস্থিত কিনা, বারবার সে প্রশ্ন করতে থাকেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) জানতে চান, “গ্রামটায় শেষ কবে গিয়েছিলেন?” তারপর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নিজেই বলতে শুরু করেন, ওই গ্রামটিতে কয়েকটি তফশিলি উপজাতি পরিবারের সদস্যদের বাস। গ্রাম থেকে কিছু অভিযোগ পেয়ে চারজনকে গ্রামে পাঠিয়েছিলেন অভিষেক। তাঁদের কাছে ওই গ্রামের বাসিন্দারা জানান, ৪ বছরের মধ্যে একবারও গ্রামে যাননি পঞ্চায়েত প্রধান।
[আরও পড়ুন: ‘হয় ঠিকাদারি করুন, নয় তৃণমূল করুন’, রানাঘাটের সভায় ফের কর্মীদের হুঁশিয়ারি অভিষেকের]
ক্ষুব্ধ অভিষেক পঞ্চায়েত প্রধানের উদ্দেশে আরও বলেন, “মানুষ সার্টিফিকেট দিলে প্রধান, নইলে নয়। মানুষ সার্টিফিকেট দেননি। আপনি প্রধানের মতো কাজ করেননি। যদি ৪ বছরে গ্রামে একবারও না যান তাহলে প্রধানের চেয়ারে বসার অধিকার নেই আপনার। সোমবার সকালের মধ্যে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেবেন।” ব্লক সভাপতিদের অনুরোধের সুরে জানান, “যেখানে যেখানে প্রধানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে আমাকে জানান। নইলে সরাসরি তার প্রভাব ব্লক সভাপতির উপর পড়বে।” ইস্তফাপত্র পাঠানোর পর নতুন প্রধান নির্বাচিত হবে বলেও জানান অভিষেক। পরবর্তী গ্রাম পঞ্চায়েত কে হবেন তা এলাকাবাসীই বেছে নেবেন মত তাঁর।
উল্লেখ্য, ডিসেম্বরের শুরুতে কাঁথির প্রভাত কুমার কলেজের মাঠে জনসভা করেন অভিষেক। সেই সভায় যাওয়ার আগে মাঝপথে কনভয় থেকে নেমে মারিশদা গ্রামে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানকার গ্রামবাসী বিশেষত মহিলারা নানা বিষয় নিয়ে অভিযোগ জানান। বাড়ি, রাস্তা ও নিকাশির সমস্যার কথা বলেন। কেউ আবার অভিযোগ জানান, সরকারি কাজে হয়রানি নিয়ে। গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মন দিয়ে তাঁদের সব কথা শোনেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। যোগাযোগের জন্য চেয়ে নেন ফোন নম্বর। তাঁদের সকলকে সাহায্যের আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি অভিষেক খোঁজ নেন ওই এলাকার পঞ্চায়েত প্রধানের বিষয়ে। এরপর কাঁথির জনসভা থেকে এই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, মারিশদা পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান ও অঞ্চল সভাপতিদের ইস্তফা দিতে হবে। অভিষেকের নির্দেশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফাও দেন তাঁরা। এবার দেখার ধনিচা গ্রামের প্রধান কী করেন।