অর্ণব দাস, বারাসত: রুমমেট উদ্ভব সরকারের সঙ্গে প্রথম দিন থেকেই বনিবনা হচ্ছিল না। শনিবার রাতেও দু’জনের মধ্যে ঝামেলা হয়। এরপরই বছর কুড়ির ছাত্রকে খুন করে বিক্রম! অশোকনগরের (Ashoknagar) নার্সিং পড়ুয়া খুনের ঘটনার তিনদিন পর বুধবার রাতে অভিযুক্ত বিক্রম সরকারকে গ্রেপ্তার করায় প্রকাশ্যে এই তথ্য। বৃহস্পতিবার ধৃতকে বারাসত আদালতে পেশ করা হলে ১০দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর এলাকার বাসিন্দা উদ্ভব সরকার অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে মেল নার্সিং কলেজের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া ছিলেন। তিনি সহপাঠীদের সঙ্গে হাসপাতাল লাগোয়া একটি বাড়িতে মাস খানেক আগে ভাড়া থাকতে শুরু করেন। একটি ঘরে চারজন থাকতেন। তাঁদের মধ্যে দু’জন শুক্রবার বাড়ি চলে যায়। শনিবার রাতে ওই ঘরে উদ্ভব এবং বিক্রম ছিল। রবিবার সকালে বিক্রমকে ঘরে তালা দিয়ে বেরতে দেখেন বাড়ির মালিক। উদ্ভবের বাড়ির লোকেরা তাকে ফোনে না পেয়ে বাড়ির মালিককে জানায়। বাড়ির মালিকও উদ্ভব এবং বিক্রমকে ফোন করলে মোবাইল বন্ধ পায়। এরপরই অশোকনগর থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে তালা ভাঙলে উদ্ভবের রক্তাক্ত মৃতদেহ খাটের নিচ থেকে উদ্ধার করে। উদ্ভবের মাথায় এবং দেহের একাধিক অংশে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলেই পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: দুর্ঘটনায় প্রৌঢ়ের মৃত্যুর প্রতিবাদে রাজ্য সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভকারীর গলা টিপল পুলিশ! উত্তাল বড়ঞা]
ঘটনার তদন্তে নেমে বুধবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের এক আত্মিয়ের বাড়ি থেকে অভিযুক্ত রুমমেট বিক্রমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, উদ্ভবের সঙ্গে প্রথম দিন থেকেই বনিবনা ছিল না বিক্রমের। শনিবার রাতেও দুজনের মধ্যে কোন একটি বিষয় নিয়ে গণ্ডগোল হয়েছিল। ধৃত পুলিশকে জানিয়েছেন, গণ্ডগোলের সময় উদ্ভব তাকে পরিবার তুলে গালিগালাজ করে। তখনই রাগে বিক্রম হাতুড়ি দিয়ে উদ্ভবের মাথায় আঘাত করে। অচৈতন্য হয়ে যাওয়ার পরেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে উদ্ভবকে কুপিয়ে খুন করে সে। যদিও খুনের পিছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
মৃতের ভাই প্রতাপ সরকার বলেন, “বিক্রম নেশা করত। সে দাদাকে নেশা করার জন্য জোর করত। কিন্তু দাদা এগুলো পছন্দ করত না। একথাগুলো দাদাই আমাদের জানিয়েছিল। এরমধ্যেই খুনের ঘটনা ঘটে গেল। আমরা চাই পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করুক এবং অভিযুক্তের কঠোর সাজা হোক।” এবিষয়ে বারাসত পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, “দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থেকে ধৃতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, সন্দেহের বিষয় সহ অন্য সব কারন গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃতের বয়ানও যাচাই করা হচ্ছে।”