প্রথম হিন্দি ছবি ‘দ্য ওয়াইফ’ মুক্তির আগে মুখোমুখি অভিনেত্রী সায়নী দত্ত (Sayani Datta)। তাঁর মনের কথা শুনলেন শম্পালী মৌলিক।
আপনার প্রথম হিন্দি ছবি ‘দ্য ওয়াইফ’-এর (The Wife) মুক্তি আসন্ন। কতটা ভাল লাগছে? নার্ভাসই বা লাগছে কতটা?
ভাললাগার বিষয়টা তো আছেই। এতটা পথ পেরিয়ে তবে প্রথম হিন্দি ছবিতে সুযোগ পাওয়া, বিরাট যুদ্ধ। একইসঙ্গে আমি খুব নার্ভাসও। তবে নার্ভাসনেস এখন তুলনায় কম কারণ, সিনেমা হলে রিলিজ করছে না, OTT-তে আসছে। হল রিলিজের চাপ মারাত্মক। আর এখানকার বিষয় একেবারেই কলকাতার (Kolkata) মতো নয়। প্রথম হিন্দি ছবি তো একটা চাপ আছেই। ন্যাশনাল অডিয়েন্স আমাকে প্রথমবার দেখবে, এক্সাইটেড তো বটেই।
১৯ মার্চ ‘জি ফাইভ’-এ আসছে ‘দ্য ওয়াইফ’। হল রিলিজ হলে কি একটু বেশি খুশি হতেন?
না, ওরকম কোনও ব্যাপার নয়। কারণ এখন OTT প্ল্যাটফর্মগুলোর অবস্থা বেশ ভাল। বড় বড় সুপারস্টারদের ছবিও তো OTT-তে মুক্তি পাচ্ছে। রিলিজ হওয়াটাই বড় ব্যাপার। আই অ্যাম গ্রেটফুল, যা পেয়েছি বা যা হচ্ছে তার জন্য।
করোনার (Corona Virus) সংকটকালেই এই ছবির কাজটা শেষ করেছেন আপনি। তার একটা ফল পাচ্ছেন শেষপর্যন্ত।
হ্যাঁ, ফল তো পাচ্ছিই। Zee Studio-র মতো প্রোডাকশন হাউস বলেই ছবিটা শেষ হয়েছে। এটা যদি এই প্রোডাকশন হাউসের বাইরে ফ্রিল্যান্স কোনও প্রোডিউসার করতেন হয়তো ছবিটার শুটিং-ই শেষ হত না। যে সময় আমরা কাজ করেছি কোভিড (COVID-19) একেবারে পিক-এ ছিল। তখন সবে লকডাউন একটু শিথিল হয়েছে। সবাই সুস্থভাবে শুটিং করে ফিরে এসেছিলাম।
নিউ ইয়র্কের বিজ্ঞাপন করিয়ে সরমদ খানের এটাই প্রথম ফিচার ফিল্ম। যেখানে আপনার বিপরীতে হাজব্যান্ডের চরিত্রে টেলিভিশন দর্শকের হার্টথ্রব গুরমীত চৌধুরী (Gurmeet Choudhary )। সব মিলিয়ে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
সত্যি কথা বলতে, কাজের অভিজ্ঞতা ভীষণ ভাল। এখানে সবাই প্রফেশনালিজম মানে। হিন্দি ছবি করছি বলে বলছি না, কাজের সময় শুটিং করতে আসা অ্যাক্টরদের এত সম্মান দেয় যে, কাজ করতে কোনও অসুবিধা হয় না। আর কো-অ্যাক্টর, তোমার অপোজিটে যে-ই কাজ করুক, সে যদি একটু সাপোর্টিভ হয় তাহলে আর তোমাকে কে দ্যাখে! যেটা আমি গুরমীতের ক্ষেত্রে পেয়েছি। সরমদ নতুন পরিচালক, নিজের মতো করে কাজ করে। ইংরেজি ছবি দেখে বড় হয়েছে। ফলে ওই জায়গাটা ধরে রেখেছে। আমাদের কোনও অসুবিধা হয়নি।
[আরও পড়ুন: কেমন হল প্রয়াত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অভিনীত ‘শ্লীলতাহানির পরে’? পড়ুন ফিল্ম রিভিউ]
কী মনে হয়, এবার টলিউডের উপেক্ষার জবাব দিতে পারবেন?
না, প্রতিযোগিতার কোনও জায়গা নেই। টলিউডে কিছু লোকের সঙ্গে সমস্যা আছে। আমার মনে হয়, তাঁরা অকারণে এত অপমান করেছেন একসময় তা আর নতুন করে বলার নয়। তাঁদের সঙ্গে আমার কোনও ব্যক্তিগত সম্পর্কও নেই। একইসঙ্গে টলিউডে (Tollywood) আমার কিছু ভাল বন্ধু-বান্ধবও আছে। যেমন, সাহেব (ভট্টাচার্য) এখনও আমার খুবই ভাল বন্ধু। ঋতুদি (ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত) কোনওদিন আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেনি। ইনফ্যাক্ট কারও সঙ্গেই ঋতুদি সেটা করে না। প্রিয়াংকার সঙ্গে আমার খুব ভাল টার্মস। যাদের সঙ্গে ভাল ছিল, আছেই।
‘দ্য ওয়াইফ’ তো হরর ঘরানার ছবি। হরর মুভি দেখতে পছন্দ করেন?
একা বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হরর মুভি দেখতে পারি (হাসি)। ভয় পাই না আমি কোনও কিছুতে। ভূতেও না।
বাংলায় আপনি ‘মাইকেল’, ‘ন হন্যতে’, ‘জাদু কড়াই’ ছাড়া আরও বেশকিছু ছবিতে কাজ করেছেন। তারপরে আরও একটু সুযোগের আশা ছিল না?
না, না আমি কোনও প্রত্যাশাই রাখিনি। কারণ, আর আমি চেষ্টাও করিনি। ওই সময়টা আমি মুম্বইয়ে দিয়েছি। তাই আমার কোনও আফসোস নেই, আমি যা করেছি কলকাতায় তাতেই আমি ভীষণ খুশি।
মুম্বইয়ে স্ট্রাগল করতে গিয়ে কলকাতার সঙ্গে তফাত কী বুঝলেন?
মুম্বইয়ে এর গার্লফ্রেন্ড, তার গার্লফ্রেন্ড বলে ছবিতে ঢোকানো যায় না, এটা বড় মুখে বলতে পারি। কলকাতায় যেটা হয়। বলিউডে এত বেশি টাকা লাগানো হয় ছবির ক্ষেত্রে, সেখানে ব্যবসায়ী ওরা, প্রথম থেকে শেষপর্যন্ত দেখে। দেখুন, লবি সব জায়গায় আছে। লবির থেকেও এখানে ঠিক করে কাজ করতে পারলে, লোকের মুখে মুখে ছড়ায়। সেই ওয়ার্ড অফ মাউথে দশটা ফোনকল পাওয়া যায়। যেখানে লবি আছে, তেমন জায়গাতেও গিয়েছি অডিশন দিতে। সেখানে কিন্তু আমাকে ডেকেছে অন্তত। কলকাতায় যেখানে লবি আছে, সেখানে আমাকে ঢুকতেই দেয়নি। বলিউডে কিন্তু কারও গার্লফ্রেন্ড হলেই ছবিতে সুযোগ আসে না। ওখানে প্রফেশনালিজম অনেক বেশি।
এখনও মুম্বই-কলকাতা যাতায়াত করবেন?
হ্যাঁ, কারণ বাবা-মা কলকাতায়, প্রতি মাসেই যাই। আমার রোজগারের সিংহভাগ ফ্লাইটেই খরচ হয়। তাছাড়া আরও দায়িত্ব আছে।
এখন কি সায়নী সিঙ্গল? মুম্বইয়ে কেউ আপনার প্রেমে পড়েনি?
হ্যাঁ, আমি সিঙ্গল। আমার প্রেমে লোকে পড়ে, আমি পড়ি না। ভীষণ হ্যান্ডসাম কিছু ছেলের
সঙ্গে আলাপ আছে। ঘুরি ফিরি কিন্তু প্রেমে পড়ি না (হাসি)।