সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: চব্বিশের লোকসভা ভোটে মহীরূহ পতন! বহরমপুরের পাঁচবারের সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরীর হার হয়েছে অপ্রত্যাশিতভাবে। আর তার প্রায় দেড় মাস পর প্রথমবার দলের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করলেন অধীরবাবু। শুক্রবার দিল্লিতে প্রায় আধঘণ্টার বৈঠকে হারের কারণ ব্যাখ্যা করলেন তিনি। দোষ চাপালেন তৃণমূলের উপর! জাতীয় স্তরে INDIA জোটে কংগ্রেসের সঙ্গে সখ্য আর রাজ্যে যুযুধান অবস্থান নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের চূড়ান্ত সমালোচনা করলেন অধীর চৌধুরী।
শুক্রবার বিকেল চারটে নাগাদ সোনিয়া গান্ধীর বাসভবনে পৌঁছন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। প্রায় আধঘণ্টা তাঁর সঙ্গে কথা হয় অধীরবাবুর। সূত্রের খবর, আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল সাম্প্রতিক লোকসভা ভোটের ফলাফল এবং তার নিরিখে প্রদেশ নেতৃত্বের পরিস্থিতি। অধীরবাবুর পরাজয় নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন সোনিয়া। তা শুনে তিনি নেত্রীকে জানিয়েছেন, সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের ফলেই বহরমপুরে তাঁর হার হয়েছে।
[আরও পড়ুন: গাংনাপুরে শুভেন্দুকে ‘চোর’ স্লোগান, মেজাজ হারিয়ে জুতো দেখালেন বিরোধী দলনেতা!]
তৃণমূলকে দোষারোপ করে তাঁর বক্তব্য, ''আমার বিরুদ্ধে এক পরিচিত মুসলমান মুখকে প্রার্থী করা হল। প্রচার করা হল, এতদিন দাদাকে ভোট দিয়েছেন, এবার ভাইকে দিন। ফলে রাজ্যের কংগ্রেস কর্মীরা সংশয়ে পড়ে গেল কাকে ভোট দেবে।'' প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ক্ষোভের সুরে আরও জানিয়েছেন, একদিকে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস দিল্লিতে ও কলকাতায় (Kolkata) ‘ইন্ডিয়া’ ‘ইন্ডিয়া’ করছে, অন্যদিকে বুথস্তরে কংগ্রেস কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছে, জোর করে তৃণমূলে যোগদান করানো হচ্ছে। বহরমপুরে (Baharampur) অধীর চৌধুরী পরাজিত হওয়ার পর থেকে দলের মধ্যেই একাধিক আলোচনা, সমালোচনা শুরু হয়েছে। জেলা নেতৃত্বের একাংশের মত, বহরমপুর-সহ একাধিক জায়গায় দলীয় সংগঠনই দুর্বল হয়ে পড়েছে। জনভিত্তি হারিয়েছে কংগ্রেস। বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাত বিধানসভার মধ্যে একমাত্র একটিতেই এগিয়ে ছিল কংগ্রেস (Congress)। বাকি ৬টিতেই পিছিয়ে। যার ফলে প্রায় ৫৪ হাজারের বেশি ভোটে সেখানে জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠান (Yusuf Pathan)।
[আরও পড়ুন: প্রেমের প্রস্তাবে ‘না’, ভরা রাস্তায় বউদির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ছুরি হাতে হামলা দেওরের!]
এর পরিপ্রেক্ষিতে অধীর চৌধুরী প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকবেন কি না, তা নিয়েও নানা জল্পনা তৈরি হয়। সূত্রের খবর, অধীর নিজেই পদ ছাড়তে চান। এনিয়ে দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে জানিয়েছেন তিনি। যদিও তা নিয়ে এই মুহূর্তে কোনও আলোচনায় করতে চায় না কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে সোনিয়ার (Sonia Gandhi)সঙ্গে অধীরের সাক্ষাৎ ও আলোচনা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের একটা বড় অংশের।