বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: বামেদের ব্রিগেডের পরও জোট নিয়ে জট অব্যাহত। এবার যুযুধান আইএসএফ এবং কংগ্রেস। ভাইজান আব্বাস সিদ্দিকির পছন্দের আসন ছাড়া নিয়ে বিবাদ তুঙ্গে। ব্রিগেডের মঞ্চেই সেই দ্বন্দ্বের প্রতিফলন দেখা গিয়েছে। নিজের অবস্থানে অনড় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও (Adhir Ranjan Chowdhury)। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মালদহ ও মুর্শিদাবাদে ফুরফুরা শরিফকে একটা আসনও ছাড়া হবে না। আব্বাস (Abbas Siddiqui) ও অধীরের এহেন অনড় মনোভাবে জোটের ফাটল যে আরও চওড়া করল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দু’পক্ষের এই ‘যুদ্ধং দেহি’ মনোভাবে বিব্রত বাম শিবিরও।
আসন ছাড়া নিয়ে কংগ্রেস ও ভাইজানের দড়ি টানাটানি এতদিন ছিল চার দেওয়ালের মাঝে। এদিন ‘ভাইজান’ই তা প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন। মঞ্চে অধীর চৌধুরির উপস্থিতিতেই বলেছেন, “তোষণের নয়, অংশীদারির রাজনীতি করতে এসেছি।” মঞ্চ থেকেই তাঁর সমর্থকদের প্রতি বামেদের ভোট দেওয়ার নির্দেশ দিলেও অপর জোটসঙ্গী কংগ্রেস সম্পর্কে নীরব থাকলেন ভাইজান। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টিকে যে তিনি ভালভাবে নিতে পারেননি, কালক্ষেপ না করে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রদেশ সভাপতি। বুঝিয়ে দিয়েছেন, ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টকে এখনও তিনি জোটের অংশীদার মানতে নারাজ।
[আরও পড়ুন : অনিশ্চিত অমিত শাহের ২ ও ৩ মার্চের বঙ্গসফর, বৈঠকে বিজেপি নেতৃত্ব]
এই প্রসঙ্গে অধীর জানান, “এখনও বাম-কংগ্রেস জোট অমিমাংসীত। আগে দুই দলের আসনরফা সম্পূর্ণ হোক। তারপর অন্যদের কথা ভাবা যাবে।” তিনি আরও জানান, “আসন সমঝোতা নিয়ে সমস্যা আছে। আলোচনা চলছে। আরও দু’-একবার বৈঠক করে সমাধান করতে হবে।” এসময় একা কংগ্রেসকে নয়, জোটের শর্ত যে সকলকেই মেনে চলতে হবে, সে কথা বলে আব্বাসদের বিরুদ্ধে সুর সপ্তমে তুলেছেন অধীর। যা আদতে আব্বাস সিদ্দিকির উদ্দেশে কড়া বার্তা বলেই কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য।
এদিনের অধীর বনাম আব্বাস বাগযুদ্ধের পর জোটের রাস্তা কিছুটা হলেও যে বন্ধুর হল, সে কথা অনস্বীকার্য। রাজনৈতিক মহলের মতে, এখন আসন সমঝোতা নিয়ে দুই দলের মধ্যে শুরু হওয়া স্নায়ুযুদ্ধের উপর নির্ভর করছে জোটের ভবিষ্যৎ। হয়তো ভোটের ভবিষ্যৎও।