কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: ফের পর্ন অ্যাপের জন্য ছবি তোলার অভিযোগ। এর আগে মডেলিংয়ের টোপ দিয়ে বোল্ড ফটোশুট করানোর অভিযোগ জানিয়েছিলেন সোদপুরের এক মডেল। সেই একই অভিযোগ এবার জানালেন নিউটাউনের দুই মডেল। রীতিমতো হুমকি দিয়ে পর্ন শুট করার অভিযোগ নিউটাউন থানায় জানিয়েছেন দুই তরুণী। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আগের ঘটনাটিতে রাজ কুন্দ্রার (Raj Kundra) পর্ন চক্রের নাম জড়িয়েছিল। সোমবারের ঘটনাতেও অভিযোগকারিনীর কথায় উঠে আসছে কুন্দ্রা কাণ্ডের যোগ। প্রথমে যিনি অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি আসানসোলের বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে গত জানুয়ারি মাস থেকে নিউটাউনে বসবাস করছিলেন। সেই সূত্রেই জানা গিয়েছে, ৫ জানুয়ারি ফেসবুকে ‘কলকাতা মডেল হাব’ নামে এক পেজের সদস্য হন ওই তরুণী। সেখানেই এক মহিলার সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। তারপর থেকে ফেসবুকে কথাবার্তা চলছিল। ফেসবুকের মহিলা তাঁকে শাড়ির প্রচারের জন্য একটি ভিডিও শুটের অফার দিয়েছিলেন। তরুণী রাজি হওয়ায় তাঁকে বালিগঞ্জে একটি ইনডোর স্টুডিওতে যেতে বলা হয়। ৭ জানুয়ারি শুটের জন্য সেখানে মোট চারজনকে ডাকা হয়েছিল। বালিগঞ্জ স্টেশন থেকে মিনিট দশেকের দূরত্বেই অবস্থিত স্টুডিওটি। স্টুডিওতে দু-একজন পুরুষ এবং আর এক মহিলা ফটোগ্রাফার ছাড়াও এক মেকআপ আর্টিস্ট ছিলেন।
তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, শুটের জন্য প্রস্তুত হয়ে ফ্লোরে যাওয়ার পর তাঁর চক্ষু চড়কগাছে ওঠার উপক্রম হয়েছিল। তিনি দেখেন, সেখানে এক মহিলা নগ্ন হয়ে পর্ন ভিডিও শুট করছেন। তৎক্ষণাৎ অভিনয় না করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তখন ফ্লোরে থাকা অন্য এক তরুণীও তাঁর সঙ্গে প্রতিবাদ জানান।
[আরও পড়ুন: এক রোগের তিন ধরনের চিকিৎসা, নার্সিংহোম বন্ধের নির্দেশ স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের]
প্রসঙ্গত, ফ্লোরে প্রতিবাদ করা ওই মডেলই দ্বিতীয় অভিযোগকারিনী। অভিযোগ, এরপরই তাঁদের রীতিমতো হুমকি দেন দুই ফটোগ্রাফার। প্রথম অভিযোগকারিনী জানিয়েছেন, মহিলা ফটোগ্রাফার বলেছিলেন, “আমরা এরকম শ্যুটই করি। ফেসবুকে যাঁর মাধ্যমে তোমাদের যোগাযোগ হয়েছে তাঁকে তেমনটাই বলা হয়েছে। সে তোমাদের না জানালে আমাদের কিছু করার নেই। তোমরা এখানে এসেছো, তাই শুট শেষ করে বের হতেতে হবে।” পারিশ্রমিক হিসেবে দুই তরুণীকে ৩৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। তরুণীদের দাবি অভিযুক্তরা তাঁদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জানায়, সংশ্লিষ্ট ভিডিওগুলি দেশের বাইরে বিশেষ গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করা হবে। দেশে কোনওভাবেই সেগুলি ভাইরাল না করার আশ্বাস দেয় অভিযুক্তরা।
অভিযোগ, এরপরই মার্চ মাসে দ্বিতীয় অভিযোগকারিনীর ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়া হয়। গত সপ্তাহে প্রথম অভিযোগকারিনীর অশ্লীল ভিডিটিও ছড়িয়ে পড়ে একাধিক পর্ন ও সোশ্যাল সাইটে। দু’জনে জানতে পারেন ‘নিউফ্লিক্স’ অ্যাপে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁদের ভিডিও। সংশ্লিষ্ট অ্যাপগুলিতে ভাইরাল ভিডিও-র লিঙ্কও তাঁর কাছে রয়েছে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন অভিযোগকারিনীরা। এই ঘটনায় রাজ কুন্দ্রার চক্রের যোগ রয়েছে বলে তরুণীদের দাবি।