সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গৃহযুদ্ধে রক্তাক্ত আফগানিস্তান। দেশে শান্তি ফেরাতে আজ থেকে ২২ দিন আগে কাতারের রাজধানী দোহায় আফগানিস্তানের সরকার ও তালিবানের মধ্যে শান্তি আলোচনার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। এর ফলে পাহাড়ি দেশটিতে ফের একবার বন্দুকের গর্জন থামবে বলে আশা জেগেছিল সাধারণ মানুষের মনে। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে এখনও কাবুলের সরকারি প্রতিনিধি ও তালিবান (Taliban) নেতৃত্বের মধ্যে মুখোমুখি কোনও আলোচনাই হয়নি। ফলে থমকে গিয়েছে গোটা শান্তি প্রক্রিয়া।
[আরও পড়ুন: নাগর্নো-কারাবাখের রাজধানীতে তুমুল গোলাবর্ষণ, ‘এগিয়ে আসছে’ আজারবাইজানের ফৌজ]
আফগান সংবাদ মাধ্যম টলো নিউজ সূত্রে খবর, বিগত কয়েকদিনে এই শান্তি আলোচনায় তৃতীয়পক্ষ বা মধ্যস্থতাকারী ‘কনট্যাক্ট গ্রুপ’গুলির সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছে আফগান সরকার ও তালিবানের প্রতিনিধি দল। তবে দু’টি বিষয়ে কিছুতেই তাদের মতের মিল না হওয়ায় থমকে গিয়েছে গোটা শান্তি আলোচনা। পরিস্থিতি এমন জায়গায় দাঁড়িয়েছে যে গত ছ’দিনে কনট্যাক্ট গ্রুপ’ও কোনও বৈঠক করেনি। যে দুই বিষয়ে এই জট তৈরি হয়েছে তার প্রথমটি হচ্ছে, আমেরিকা ও তালিবানের মধ্যে হওয়া শান্তিচুক্তিকে ভিত্তি হিসেবে পরিচিতি দিয়ে বর্তমান আলোচনা চালাতে হবে আফগান সরকারকে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, আলোচনার নীতি নির্ধারণ করতে হবে হানাফি (ইসলামের একটি শাখা) রীতি মেনে।
এদিকে, তালিবানের শর্ত মানতে নারাজ আফগান সরকার। কাবুলের প্রতিনিধিদের বক্তব্য সরকারের সঙ্গে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে শান্তি আলোচনা চালাতে হবে তালিবানকে। আমেরিকার সঙ্গে তারা কী কী শর্তে শান্তি আলোচনায় রাজি হয়েছে তা মানতে আফগান সরকার বাধ্য নয়। আর আলোচনায় শুধু হানাফি নয় শিয়াদেরও কথা বলার অধিকার দিতে হবে। এখনও পর্যন্ত কোনও পক্ষই নিজেদের অবস্থান থেকে সরতে রাজি নয়। ফলে আলোচনা আপাতত থমকে গিয়েছে। যদিও দুই পক্ষকেই বোঝানোর জন্য ময়দানে নেমেছেন আফগানিস্তানে (Afghanistan) আমেরিকার বিশেষ দূত জালমে খলিলজাদ।
উল্লেখ্য, প্রায় দু’দশক ধরে চলা যুদ্ধের পর বিগত কয়েকমাসে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনার মঞ্চে আসে তালিবান। গত জানুয়ারি মাসে দু’পক্ষের মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তারপরই আফগানিস্তান থেকে সেনা সরানোর কথা ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তালিবান জঙ্গিরা বেগড়বাই করলে ফের ফৌজ মোতায়েন করবে আমেরিকা। তবে সেই আলোচনায় আফগান সরকারের ভূমিকা না থাকায় গোটা প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন উঠছিল। এহেন পরিস্থিতিতে এবার আফগানিস্তানে পূর্ণ শান্তি স্থাপন করার উদ্দেশ্যে দোহায় এই বৈঠক ফলপ্রসূ হবে বলেই আশা কূটনৈতিক মহলের।