সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০২১ সাল থেকে তালিবান শাসনে জর্জরিত আফগানিস্তান। তালিবানদের অত্যাচারে নাজেহাল অবস্থা সেদেশের নাগরিকদের। ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের পর থেকেই ক্রমে বিপন্ন হয়েছে আফগান মেয়েদের স্বাধীনতা। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কর্মজগৎ, নারী তার অধিকার থেকে সর্বত্রই বঞ্চিত। এবার জানা যাচ্ছে, সেদেশের সমস্ত বিউটি পার্লার বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তালিবান সরকার। এহেন পরিস্থিতিতে রাজধানী কাবুলের রাজপথে নেমে এসে প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেল আফগান মহিলাদের।
সংবাদ সংস্থা এএফপি দাবি করেছে, আজ অর্থাৎ বুধবার প্রায় ৫০ জন মহিলা প্রতিবাদ জানানোর জন্য একত্রিত হন কাবুলের বুচার স্ট্রিটে। দ্রুত এই জমায়েত ছত্রভঙ্গ করতে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। প্রতিবাদীদের সরিয়ে দিতে জল কামানও ব্যবহার করা হয়।
গত মাসেই আফগানিস্তানের ‘পাপপুণ্য মন্ত্রক’ গোটা দেশের হাজার হাজার মহিলা পরিচালিত পার্লার বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশিকা জারি করে। এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে আজ মহিলারা প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন। প্রতিবাদীদের মধ্যে একজন জানিয়েছেন, “আজকে আমরা এই বিষয় আলোচনা করার জন্যই প্রতিবাদের পথ বেছে নিয়েছিলাম। কিন্তু কেউ আমাদের সঙ্গে কথা বলেননি। উলটে আমাদের হটিয়ে দেওয়ার জন্য জল কামান ব্যবহার করা হয়।”
[আরও পড়ুন: ব্রিটেনে আর জায়গা হবে না আয়লানদের! নতুন বিল আনল সুনাক সরকার]
আফগানিস্তানে এমন অনেক মহিলা রয়েছেন, যাঁরা পার্লারে কাজ করেই নিজেদের সংসার চালান। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এই মহিলারাই হয়তো বাড়ির একমাত্র রোজগেরে মানুষ। স্বাভাবিকভাবেই এই নির্দেশিকা কার্যকর হলে না খেয়ে মরতে হবে তাঁদের। অন্যদিকে, এই ধরনের নির্দেশিকা জারি করার পিছনে সরকারের আজব যুক্তি, অনেকেই পার্লারে রূপচর্চার জন্য বেহিসেবি অর্থ ব্যয় করেন। তাই অনেক পরিবার অর্থকষ্টে ভোগে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে মার্কিন প্রশাসন আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর তালিবানি শাসনে চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন নাগরিকরা। বিশেষত নিশানা করা হয়েছে মেয়েদের। তাঁদের সমস্ত রকম বিনোদনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। স্কুল-কলেজ থেকে খেলার মাঠ, পার্ক সর্বত্র মেয়েদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এবার বিউটি পার্লারের দরজাও বন্ধ করতে উদ্যোগী তালিবানরা।