সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তথ্য পাচার কাণ্ডের বিস্তারিত নথি চেয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে বুধবার নোটিস পাঠাল কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতীয় ভোটার ও গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য সত্যিই কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা বা অন্য কোনও সংস্থার কাছে পাচার হয়েছে কি না, হলে সেই তথ্য ভারতে কোনও নির্বাচন প্রভাবিত করতে ব্যবহার হয়েছে কি না, জানতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক। ৭ এপ্রিলের মধ্যে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে জবাব দিতে হবে। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার এ বিষয়েই আরও একটি নোটিস পাঠানো হয়েছিল কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা’কে। ব্যক্তিগত তথ্য পাচার রোধে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তথ্য কতটা গোপন ও সুরক্ষিত থাকে, সেটাও জানতে চেয়েছে কেন্দ্র।
[BFF লিখেই থেমে গেলেন? ফেসবুকে এই শব্দগুলিও লিখে দেখুন না কী হয়!]
এদিকে, ফেসবুক থেকে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার তথ্য হাতানোর অভিযোগে নয়া মোড়। মঙ্গলবার অভিযুক্ত সংস্থার সঙ্গে কংগ্রেসের যোগাযোগের প্রমাণ পেশ করছিলেন প্রতিবাদী ক্রিস্টোফার উইলি। বুধবার তিনি টুইটারে যে সমস্ত নথি ফাঁস করেছেন, তাতে সংস্থার গ্রাহক হিসাবে নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দলের নাম উঠে এসেছে। তিনি জানান, ভারতীয় সাংবাদিকদের অনুরোধে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার ভারতে কয়েকটি পুরনো কর্মসূচির বিবরণ প্রকাশ করছেন।
কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করছে ব্রিটেনের হাউস অফ কমনসের ডিজিটাল, কালচার, মিডিয়া ও স্পোর্টস কমিটি। সেই কমিটির হাতেই মঙ্গলবার সাক্ষ্য দিতে গিয়ে যাবতীয় নথি তুলে দেন ক্রিস্টোফার। তাতে উল্লেখ রয়েছে, ভারতে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার প্রচুর কর্মী রয়েছে। শুধু তাই নয়, এদেশে দপ্তরও রয়েছে বিতর্কিত ওই সংস্থার। এদিন তিনি টুইটারে একটি নথি পোস্ট করেছেন। যেখানে সংস্থার ভারতে কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। গ্রাহক হিসাবে নাম রয়েছে জেডি (ইউ)-এরও। উল্লেখ্য, ওই দলেরই সাংসদ কে সি ত্যাগীর ছেলে অমরীশ কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার সহযোগী সংস্থা ওভলেনো বিজনেস ইন্টেলিজেন্সের অন্যতম ডিরেক্টর ছিলেন। যদিও দলের সঙ্গে তাদের যোগসূত্রের খবর অস্বীকার করেছিলেন ত্যাগী। কিন্তু উইলির নথি থেকে জানা যাচ্ছে, ২০১০-এর বিহার বিধানসভা নির্বাচনে জিততে জেডি (ইউ) কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার সাহায্য নিয়েছিল। নির্বাচনী তথ্য বিশ্লেষণ ও কৌশল তৈরি করতে সাহায্য করেছিল বিতর্কিত সংস্থাটি। বিহারে জেডি (ইউ) এখন বিজেপির জোটসঙ্গী।
[তথ্য চুরি নিয়ে ফেসবুককে সতর্ক করল কেন্দ্র]
উইলির পেশ করা নথি থেকে স্পষ্ট, ভারতের বিভিন্ন জাতভিত্তিক তথ্য সংগ্রহেও কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা জোর দিয়েছিল। ২০১২-য় তাদের ভারতীয় শাখা এসসিএল ইন্ডিয়া উত্তরপ্রদেশে একটি জাতীয় দলের তরফে জাতসুমারি করেছিল। যদিও দলটির নাম নথিতে উল্লেখ নেই। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার মূল সংস্থা এসসিএল গোষ্ঠীর গাজিয়াবাদের ইন্দিরাপুরমে ভারতীয় সদর দপ্তর। পাশাপাশি, কলকাতা, আমেদাবাদ, বেঙ্গালুরু, কটক, গুয়াহাটি, হায়দরাবাদ, ইন্দৌর, পাটনা ও পুণেতে রয়েছে শাখা দপ্তর। উইলি দু’টি ছবিও পোস্ট করেছেন। যেগুলি দেখে মনে হচ্ছে, ভারতের জাতীয় স্তরের অভিজ্ঞতার ব্যাখ্যা দেওয়া রয়েছে। দেশের প্রায় ৬০০টি জেলা ও সাত লক্ষ গ্রামের তথ্যপঞ্জি রয়েছে সংস্থার ভাণ্ডারে।
মঙ্গলবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কমিটির সামনে শপথ নিয়ে ক্রিস্টোফার বলেছিলেন, “ভারতে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা প্রচুর কাজ করেছে। কংগ্রেস তাদের গ্রাহক ছিল। তবে অন্যান্য বহু সংস্থার হয়েও কাজ করেছে তারা।
[ফেসবুক গ্রাহকদের তথ্যফাঁসে অভিযুক্ত কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার একাধিক দপ্তরে তল্লাশি]
The post তথ্য পাচার কাণ্ডে এবার ফেসবুককে নোটিস পাঠাল কেন্দ্র appeared first on Sangbad Pratidin.