সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যুদ্ধের করুণায় জীবন ছিল না, এখন জল নেই গাজায়! এবার কী মানুষগুলো তৃষ্ণায় মরবে? যুদ্ধবিরতির পর ইজরায়েলি বাহিনীর বুলেটের ভয় কেটেছে। তার পরেও ‘মৃত্যুপুরী’ গাজা! চারদিকে ধ্বংসের ছবি। মিশাইল হামলায় গুড়িয়ে যাওয়া বাড়ি-ইস্কুল-দোকান-বাজার মিলে ভূতুড়ে একটা দেশ। বাতাস এখনও পোড়া বারুদের গন্ধে ভারী। হামাস-ইজরায়েল শান্তিচুক্তির পর এই ধ্বংসস্তূপের মাঝখান থেকে পথ করে ঘরে ফিরছেন ভাগ্যক্রমে জীবিত প্যালিস্তীয়রা। ফিরেই নতুন দুঃস্বপ্নের মুখোমুখি! ভয়ংকর জলের কষ্ট। এমন অবস্থা কেন হল?
ক্রমাগত ইজরায়েলি হানায় অবশিষ্ট নেই কোনও কুয়ো! ধ্বংস হয়ে গিয়েছে জলের পাম্প, টিউবয়েল। এক ফোঁটা জলের জন্য হাহাকার গোটা গাজা জুড়ে। উত্তর গাজার শহরতলি বেইত লাহিয়ার এক বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের বাসেল রাজাব বলেন, "আমরা ফিরেছি বটে। কিন্তু একটি পাম্প, কুয়োও অবশিষ্ট নেই। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আমাদের বাড়ি হারিয়ে গিয়েছে।" কৃষক রাজাব জানান, "তাঁবু খাটিয়ে আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু এক ফোটা জল পাই কোথায়! আমাদের কাছে জল নেই। কষ্ট পাচ্ছি।"
হামাস-ইজরায়েলের ১৬ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর জলপান, রান্না করা, কাপড় কাচা বিলাসিতা হয়ে দাঁড়িয়েছে গাজায়। রাজাব জানান, স্নান করতে ১০ মাইল দূরে হেঁটে যেতে হচ্ছে। ঘরে ফেরা প্যালিস্থিনীয়দের অনেকে জলের সমস্যা সমাধানে সমুদ্রের কাছাকাছি কুয়ো খুঁড়ছেন। কিছু পাইপ লাইনে যে নোনা জল মিলছে, তাই দিয়েও কাজ চালাচ্ছেন অনেকে। প্যালেস্টাইনের পানীয় জল দপ্তর জানিয়েছে, জলের ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে ২.৭ মলিয়ান ডলারের প্রয়োজন। অথচ কোষাগার ফাঁকা। 'শত্রু' ইজরায়েল আশ্বাস দিয়েছে, বেশ কিছু মেরামতির কাজ করবে তারা। উল্লেখ্য, শুধু জলের হাহাকার নয়, মৃত্যুপুরী গাজাতে নেই খাবার, জ্বালানি, ওষুধ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুদ্ধপরবর্তী গাজার নতুন সংকট যুদ্ধের চেয়েও ভয়ংকর!