সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় দলের কোচের পদ থেকে ইগর স্টিমাচকে (Igor Stimac) বরখাস্ত করার পর পালটা দিয়েছিলেন প্রাক্তন কোচ। অবিলম্বে প্রাপ্য টাকা ফেরতের দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। নাহলে ফিফায় যাওয়ার হুমকিও দেন। এবার তার পালটা দিল এআইএফএফ (AIFF)। যেখানে স্টিমাচের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। বোঝানো হয়েছে স্টিমাচের সঙ্গে চুক্তিপত্রের যাবতীয় জটিলতা। আর তার সঙ্গে প্রাক্তন কোচকে যত রকম সাহায্য করেছে ফেডারেশনের বর্তমান কমিটি, সেগুলিও তুলে ধরা হয়েছে। তার পরেও কেন স্টিমাচ প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন, সেটা নিয়ে বর্তমান কর্তৃপক্ষ বিস্মিত। দীর্ঘ বয়ানে সেই ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে।
ভারতীয় মুদ্রায় স্টিমাচের বেতন ছিল মাসিক ২৬ লক্ষ টাকা। তাঁর সঙ্গে চুক্তি ছিল ২০২৬ পর্যন্ত। এই অবস্থায় স্টিমাচের ক্ষতিপূরণ কমপক্ষে ছয় কোটি টাকার উপর। শুধু বেতনই নয়। তার সঙ্গে যোগ হবে ট্যাক্সের টাকাও। সেটাও কম নয়। স্টিমাচ বারবার বলে আসছেন, তাঁকে বরখাস্ত করার আগে কোনওরকম আলোচনার সুযোগই দেননি ফেডারেশন কর্তারা। এই ধরণের পরিস্থিতি যখন থাকে, তখন দু’পক্ষই আলোচনার টেবিলে বসে বিষয়টি সমঝোতায় আসে। তারপর গোল্ডেন হ্যান্ডশেক করা হয়। স্টিমাচের দাবি অনুযায়ী, এক্ষেত্রে তা হয়নি।
[আরও পড়ুন: আগামী মাসে ভারতের জিম্বাবোয়ে সফর, টিম ইন্ডিয়ার নেতৃত্বে শুভমান গিল, ঘোষিত ভারতীয় দল]
যদিও নিজেদের বয়ানে ফেডারেশন থেকে পরিষ্কার বলা হয়েছে যে, তারা কোনও বিতর্কে যেতে চান না। স্টিমাচকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত যে সঠিক, সেটা জোর দিয়েই জানাচ্ছে ফেডারেশন। নতুন কমিটি যখন ক্ষমতায় আসে, ততদিনে স্টিমাচের কোচিং ৩ বছর পার হয়ে গিয়েছে। ২০২৩-র অক্টোবরে তাঁর চুক্তি দুবছর বাড়ানো হয়। ২০২৪-র ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৫-র জানুয়ারি পর্যন্ত স্টিমাচের মাসিক বেতন ঠিক করা হয় ২৬ লক্ষ টাকা। আর ২০২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৬-র জানুয়ারি পর্যন্ত বেতন হবে ৩৩ লক্ষ টাকা। তার সঙ্গে এমনভাবে নতুন চুক্তি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যাতে ফেডারেশন নিজেদের যুক্তি অনুযায়ী স্টিমাচকে বরখাস্ত করার স্বাধীনতা পায়।
তার সঙ্গে গত কয়েক বছরে স্টিমাচকে যে সকল সুবিধা দেওয়া হয়েছে, তাও তুলে ধরা হয়েছে। আধুনিক জিপিএস টেকনোলজি, এফএসডিএলের সঙ্গে আলোচনা করে প্লেয়ারদের জাতীয় শিবিরে নিয়ে আসা, দীর্ঘ ক্যাম্পের আয়োজন, সাপোর্ট স্টাফদের আয়োজন, সবই করা হয়েছে ফেডারেশনের তরফ থেকে। এমনকী কর্তাদের অজ্ঞাতেই জ্যোতিষীর সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন স্টিমাচ। এর আগেও স্টিমাচ ফেডারেশনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনেছিলেন। সেগুলোকে কর্তারা গায়ে মাখেননি। কিন্তু সম্প্রতি প্রাক্তন কোচ যেভাবে 'মিথ্যা' অভিযোগ এনেছেন, তার বিরোধিতা করছে ফেডারেশন। ফুটবলাররাও আহত হয়েছেন স্টিমাচের অভিযোগে।
তাঁকে বোঝাপড়ার মাধ্যমে কোচের পদ থেকে সরে যাওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই তাঁকে অপসারিত করা হয়। আপাতত ভবিষ্যতের দিকেই তাকাতে চায় এআইএফএফ।