সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দাদার মৃত্যুতে এক ফোঁটা চোখের জল ফেলেননি। কিন্তু ঐন্দ্রিলার (Aindrila Sharma) অকালপ্রয়াণ মেনে নিতে পারেননি সায়নী ঘোষ (Saayoni Ghosh)। তাঁর গাল বেয়ে পড়েছে চোখের জল। ঐন্দ্রিলার জন্য, তাঁর পরিবারের জন্য আর সব্যসাচীর জন্য। দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে একথা জানিয়েছেন অভিনেত্রী তথা যুব তৃণমূলের সভানেত্রী।
সায়নী জানান, এক অডিশনে তাঁর ঐন্দ্রিলার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। বেশি কথা হয়নি। তবে ঐন্দ্রিলার মৃদু হাসি সায়নীর মনে রয়ে গিয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে ঐন্দ্রিলা যে লড়াই করেছেন, তার খবরাখবর রেখেছেন সায়নী। ঐন্দ্রিলা ও সব্যসাচীর বন্ধু তথা অভিনেতা সৌরভ দাসকে তিনি কিছু প্রয়োজন হলে জানাতে বলেছিলেন। জবাবে সৌরভ বলেছিলেন, “ওর জন্য প্রার্থনা কর”। এই কথাতেই আট বছর আগে বেঙ্গালুরুর বেসরকারি হাসপাতালের দিনগুলোতে ফিরে গিয়েছিলেন সায়নি।
[আরও পড়ুন: প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার লস এঞ্জেলেসের বাড়িতে কী করছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত? ছবি ঘিরে শোরগোল]
হার্টের সমস্যা ছিল সায়নীর দাদা সুমন ঘোষের। দ্বিতীয় হার্ট সার্জারির পর ৯ দিন কোমায় ছিলেন। তাই “মায়ের রোজ রাতে উঠে ডুকরে ডুকরে কান্না”, “বাবার সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে” সন্তানকে ফিরিয়ে আনার লড়াই তিনি জানেন। মাস দেড়েক বেঙ্গালুরুতে জীবন-মরণ লড়াইয়ের পর কলকাতায় আনা হয়েছিল সায়নীর দাদাকে। কিন্তু তার তিন দিনের মাথাতেই প্রয়াত হন তিনি।
দাদার ও নিজের পরিবারের লডাইয়ের কথা জানানোর পরই সায়নী লেখেন, “সেদিন ও চলে যাওয়ার পর চোখ থেকে এক ফোঁটা জল পড়েনি। আজ পড়ল। ঐন্দ্রিলার জন্য, ওর বাড়ির লোকের জন্য, সব্যসাচীর জন্য। প্রার্থনা, শুভ কামনা, সব কিছুরই নিশ্চয়ই প্রয়োজনীয়তা আছে, কার্যকারিতাও আছে। কিন্তু সেদিন বুঝেছিলাম যে রাখে হরি তো মারে কে আরে মারে হরি তো রাখে কে?”
সায়নী জানান, দাদার মৃত্যুর পর তাঁর মা সমস্ত ঠাকুরের ছবি সরিয়ে দিয়েছিল। ৩০ বছরের পুরনো কালীমূর্তি ছেলের মৃতদেহের পাশে ছুড়ে ভেঙে দিয়েছিলেন তাঁর বাবা। বলেছিলেন, “আজ থেকে আমার ছেলেও নেই, আমার মা ও নেই!” অতীতের এই যন্ত্রণার কথা স্মরণ করেই সায়নী লেখেন, “সময় পেরিয়েছে, ব্যথা কিছুটা প্রশমিত, ঈশ্বরে বিশ্বাস ফিরেছে আস্তে আস্তে। কিন্তু একটা শূন্যতা সারা জীবনের। সব্যসাচীরও তাই। সবাই ওর জন্য অনেক চেষ্টা করেছে, ও নিজের জন্য সব থেকে বেশি চেষ্টা করেছে, অনেকটা পেরেছে, শেষ টা পারে নি! আপনাদের প্রার্থনা যেন না থামে। প্রার্থনা করুন ওর পরিবার যেন শক্তি পায়, ছেলেটি যেন মানসিক ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে। আমাদের জন্যও সবাই করেছিল, অফুরান, তাই আমরাও পেরেছি, ওরাও পারবে! আর ঐন্দ্রিলা, মিষ্টি মেয়ে… কত সাহসী তুই…বিশ্বাস কর, তুই থাকবি, সবটা জুড়ে থাকবি, সারা জীবন থাকবি… যেমন আছে দাদাভাই!”