অজিঙ্ক রাহানে: এই লেখায় আমি বলব না, শচীন (Sachin Tendulkar) পাজি ঠিক কতটা ভাল। বরং আমি দুটো ঘটনার কথা বলব, যেখানে শচীন পাজি আমার জীবনে প্রভাব ফেলেছিলেন। প্রথমটা, ২০১৩ সালে। ওঁর ক্রিকেট থেকে অবসরের দিন। দ্বিতীয়টা, ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে। যে দিন এমসিজিতে আমার ভারত অধিনায়কত্ব করার সুযোগ এসেছিল।
প্রথম নভেম্বর ২০১৩-র কথা বলি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে টেস্ট শেষ হয়েছে সবে। ওয়াংখেড়েতে পাজি নিজের অবসর-বক্তৃতা দিয়ে ফিরে এসেছেন ড্রেসিংরুমে। আমরা ঠিক করেছিলাম যে, পাজিকে একা ছেড়ে দেব। কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম যে, শচীন পাজি আমাকে ডাকছেন! সেই ম্যাচটায় আমি দ্বাদশ ব্যক্তি ছিলাম। আর সে দিন যা বলেছিলেন, তুলে দিলাম। “…আমি তোমাকে আজ থেকে চিনি না। গত কয়েক বছরে একনিষ্ঠ সাধকের মতো ক্রিকেটের সেবা করে গিয়েছ তুমি। ২০১৩ সালে তুমি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ টেস্ট খেলেছ। তারপর রোহিত এসে তোমার জায়গা নিয়ে নিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দুর্ধর্ষ ডাবল সেঞ্চুরি করে। কিন্তু তুমি আবার সুযোগ পাবে। আর যে দিন পাবে, চেষ্টা করবে দু’হাতে সেই সুযোগটা নেওয়ার। তুমি যদি বরাবরের মতো খেলাটার সেবা করে যাও, খেলাটাও তোমার দায়িত্ব ভবিষ্যতে ঠিক নিয়ে নেবে…।”
[আরও পড়ুন: ‘দলের কর্মী হয়েও বিপদে কাউকে পাশে পাইনি’, সিবিআই তল্লাশির পর অভিমানী TMC বিধায়ক তাপস]
দ্বিতীয় ঘটনাটা এমসিজির। আগেই লিখলাম, সেই টেস্টে নামার আগে অ্যাডিলেডে ছত্রিশ অলআউট হয়ে ফিরেছিলাম। টিম হিসাবে খুব খারাপ খেলেছিলাম আমরা, আর বিরাট ব্যক্তিগত কারণে দেশে ফিরে গিয়েছিল। ওই কঠিন সময়ে আমাকে বলা হয়, নেতৃত্বের দায়িত্ব নিতে। কী করব ভাবতে ভাবতে আবার আমার মন শরণাপন্ন হল শচীন পাজির। ১৯৯৯ সালে মেলবোর্নে দুর্ধর্ষ একটা সেঞ্চুরি করেছিলেন উনি। আমি মাঠে নামার আগে বারবার শচীন পাজির সেই ব্যাটিং ভিডিও দেখছিলাম। অন্তত পাঁচ-ছ’বার তো দেখেইছি। নিঃসন্দেহে যা আমাকে প্রভূত সাহায্য করেছিল। এমসিজিতে সেই বক্সিং ডে টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলাম আমি। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ, আমার টিম জিতেছিল, সিরিজ ১-১ করে দিয়েছিল। শেষে আমরা সিরিজ জিতি, ব্রিসবেন টেস্ট জিতে। যে সিরিজ জয় আমার কেরিয়ারের সেরা। আর সেখানেও ওতপ্রোতভাবে আমার সঙ্গে পাজি ছিলেন। আমি আবারও তাঁর থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছিলাম।