সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও থামার নাম নেই হামাস বনাম ইজরায়েল যুদ্ধের। ইজরায়েলি সেনার অভিযানে গোটা গাজা ভূখণ্ডই কার্যত গুঁড়িয়ে গিয়েছে। খাবার, জলের অভাবে চারদিকে শুধুই হাহাকার। জারি রয়েছে মৃত্যুমিছিল। গাজায় আক্রমণ থামানো নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মুখে পড়েছে তেল আভিভ। কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তেই অনড় রয়েছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এই আবহে তাঁর সঙ্গে দেখা করলেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। ফলে কূটনৈতিক মহল মনে করছে, এবার কী তাহলে দিল্লির হস্তক্ষেপে গাজায় শান্তি ফিরতে পারে?
এএনআই সূত্রে খবর, সোমবার ইজরায়েলে নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ভারতের ‘সুপার স্পাই’ ডোভাল। পণবন্দিদের দ্রুত মুক্তি, মানবিক সহায়তা প্রদান, আঞ্চলিক উন্নতি এইরকম একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করেন দুজনে। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইজরায়েলে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত-সহ আরও উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। এদিনের সাক্ষাৎ নিয়ে নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে এক্স হ্যান্ডেলে জানানো হয়, ‘আজ প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দেখা করেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে। বর্তমানে গাজায় লড়াইয়ের প্রকৃত চিত্র তাঁর কাছে তুলে ধরা হয়েছে। পণবন্দিদের দ্রুত ছাড়িয়ে আনার উদ্যোগ ও মানবিক সহায়তা জারি রাখার বিষয়ে দুপক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।’
[আরও পড়ুন: সেলা টানেলে বেজায় চিন্তিত চিন, ফের অরুণাচল নিয়ে দন্তবিস্তার ‘ড্রাগনে’র]
গাজার যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, মিশর, জর্ডন, কাতারের মতো মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কীভাবে এই রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে ইতি টেনে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায় তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তাঁদের মধ্যে। বিশ্লেষকদের মতে, নয়াদিল্লির সঙ্গে ইজরায়েলের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে গাজার মৃত্যুমিছিল নিয়েও উদ্বিগ্ন ভারত। ফলে গাজায় শান্তি স্থাপনের ক্ষেত্রে বিশেষ উদ্যোগ নিতে পারে মোদি সরকার। ‘বন্ধু’ দিল্লির হস্তক্ষেপে নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করতে পারেন নেতানিয়াহু। সেই কারণেই হয়তো ইজরায়েলে গিয়ে বৈঠক করেছেন ডোভাল।
সিএনএন সূত্রে খবর, বিভিন্ন দেশের চাপ সত্ত্বেও নতি স্বীকার করতে রাজি নন নেতানিয়াহু। হামাস নিধনে এই যুদ্ধ তিনি চালিয়ে যাবেন। গত রবিবার ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ফের একবার জানিয়ে দিয়েছেন, “রাফাতে সামরিক অভিযান চলবেই। ফের যেন ৭ অক্টোবরের মতো দিন আমাদের দেখতে না হয় তা নিশ্চিত করতেই আমরা এই কাজ করছি। হামাস জঙ্গিদের আমাদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করতেই হবে। আমার একটা লাল রেখা নির্ধারণ করা রয়েছে। আর আপনারা খুব ভালো করে জানেন সেই রেখাটা কী।” ফলে এখনই যে এই লড়াই থামছে না তা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে যায় নেতানিয়াহুর কথায়।