সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জার্মানি থেকে দেশে ফিরলেই গ্রেপ্তার করা হবে বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনিকে। এমনটাই জানিয়েছে রাশিয়ার (Russia) কারা কর্তৃপক্ষ ‘ফেডারেল পেনিটেনশিয়ারি সার্ভিস’। তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রবল সমালোচক নাভালনির উপর কৌশলে চাপ বাড়াচ্ছে মস্কো।
[আরও পড়ুন: কিমের ‘শক্তিশেল’, বিশ্বের ‘সবথেকে শক্তিশালী’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন উত্তর কোরিয়ার]
সম্প্রতি এক বিবৃতি জারি করে রাশিয়ার কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০১৪ সালের আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলায দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল নাভালনিকে। তবে আদালত তিন বছর জেলের সাজা দিলেও কারাগারে দিন কাটাতে হয়নি তাঁকে। কারণ, দোষী সাব্যস্ত হলেও নাভালনির সাজা মকুব (‘সাসপেন্ডেড সেন্টেন্স’) করে দেওয়া হয়। কিন্তু শর্ত মোতাবেক তাঁকে থানায় বা সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের কাছে সময়ে সময়ে হাজির দিতে হয়। কিন্তু আদালতের বেঁধে দেওয়া শর্ত মানছেন না নভালনি। তাই দেশে ফিরলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে। শুধু তাই নয়, কয়েকদিন আগে ফের একটি দুর্নীতি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এদিকে, এই মামলা সাজানো বলে শুরু থেকেই অভিযোগ জানিয়ে আসছেন নাভালনি। তিনি দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন ও ক্রেমলিনে হওয়া দুর্নীতি ফাঁস করার জন্যই তাঁকে নিশানা করা হচ্ছে। তবে এই মামলায় নাভালনি পাশে দাঁড়িয়ে রাশিয়ার আদালতের নির্দেশকে বেআইনি বলে উল্লেখ করেছে ইউরোপের মানবাধিকার আদালত।
উল্লেখ্য, আগস্টের ২০ তারিখ সাইবেরিয়ার টমস্ক থেকে বিমানে মস্কো ফিরছিলেন নাভালনি ( Alexei Navalny)। মাঝ আকাশে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। উপায় না দেখে ওমস্ক শহরে বিমানের জরুরি অবতরণ করিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা। নাভালনি ঘনিষ্ঠদের প্রাথমিক ধারণা, টমস্ক বিমানবন্দরে তাঁর চায়ে বিষ মেশানো হয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, নাভালনির স্নায়ুতন্ত্র ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছিল। কোমায় আচ্ছন্ন হন তিনি। সেটা বিষের প্রভাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছিল। এরপর নাভালনির শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকায় জার্মানির বার্লিনে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষানিরীক্ষার পর বিষ প্রয়োগের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেন। তারপর সুইডেন ও ফ্রান্সের গবেষণাগারও সাফ জানায়, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর বিরোধী নাভালনির উপর সোভিয়েত জমানার ভয়াবহ নার্ভ এজেন্ট নভিচক প্রয়োগ করা হয়েছিল।