সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গুজবের জেরে শিল্পীকে পিটিয়ে খুন। ২০২১ সালের ওই ঘটনায় ৪৯ জনকে প্রাণদণ্ড দিল আলজেরিয়া। দেশটিতে একসঙ্গে এতজনের মৃত্যুদণ্ড বেনজির বলেই দাবি করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
গত বছর অর্থাৎ ২০২১-এ গণপিটুনিতে মৃত্যু হয় ৩৮ বছরের শিল্পী জামেল বেন ইসমাইলের। শহরের মাঝে খোদ একটি থানার সামনে গণপিটুনির হাড়হিম করা সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। ভিডিওতে পুলিশের ভ্যান থেকে টেনে নামিয়ে বেন ইসমাইলকে বেধড়ক মারধর করতে দেখা যায়। খুনের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য তাঁর অঙ্গচ্ছেদও করা হয়। বনাঞ্চলে আগুন লাগানোর নেপথ্যে বেন ইসমাইলের হাত রয়েছে বলে গুজব ছড়িয়েছিল। সেই কারণেই তাঁর উপর হামলা হয় বলে আদালতে জানায় পুলিশ। ওই মামলায় ৪৯ জনকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২৮ জনকে কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে আলজেরিয়ার আদালত।
[আরও পড়ুন: রাজনৈতিক ব্যর্থতার জন্যই বাংলাদেশ যুদ্ধে হার, বিস্ফোরক পাক সেনাপ্রধান বাজওয়া]
নিয়তির পরিহাস, দাবানল নেভানোর কাজে সাহায্য করতেই সেখানে এসেছিলেন শিল্পী জামেল বেন ইসমাইলের। তবে কাবায়লি অঞ্চল থেকে নিজের এলাকায় ফিরে আসার পরই স্থানীয়রা জামেলকে মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করে। সেসময় স্থানীয়রা দাবি করেন, জামেল নিজেই জঙ্গলে আগুন লাগিয়েছেন।
বলে রাখা ভাল, কয়েক বছর ধরেই আলজেরিয়ায় বড়সড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে দাবানল। জঙ্গলে লাগাতার ঘটে চলা অগ্নিকাণ্ডের জেরে প্রভাব পড়ছে কৃষিকাজে। শুধু তাই নয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আগুন বনাঞ্চল সংলগ্ন উপজাতিদের গ্রামগুলিতে ছড়িয়ে পড়ছে। আলজেরিয়ার প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রতি বছর বনাঞ্চলের অগ্নিকাণ্ডের জেরে ১০০ থেকে ১৫০ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। ২০২১ সালেও রাজধানী আলজিয়ার্স থেকে প্রায় ৩২০ কিলোমিটার দূরের কাবায়লি প্রদেশে এমনই এক আগুনে প্রাণ হারান ৯০ জন।
বিবিসি সূত্রে খবর, দোষীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা নাও হতে। কারণ, বহু বছর ধরেই প্রাণদণ্ডের উপর স্থগিতাদেশ রয়েছে দেশটিতে। শেষবার আলজেরিয়ায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছিল ১৯৯৩ সালে। সেবার প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়েছিল সাত মুসলিম সন্ত্রাসবাদীকে। ফলে এবার দোষীদের প্রাণদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে।