রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: ১০০ দিনের গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পে গোটা দেশে সেরা হল আলিপুরদুয়ার (Alipurduar)। এর আগে এই প্রকল্পে ভালো কাজের জন্য রাজ্যে সুনাম কুড়িয়েছিল উত্তরবঙ্গের এই জেলার। সোমবার এই সুখবর জানিয়েছেন আলিপুরদুয়ার জেলার জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মীনা।
এদিন জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ২০২০-২১ সালে কাজের নিরিখে আলিপুরদুয়ার জেলা গোটা দেশে সেরা হয়েছে। ২০২০-২১ সালের বাজেটে আলিপুরদুয়ার জেলায় মহাত্মাগান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পে ১ কোটি ১০ লক্ষ ৪১৬ শ্রমদিবসের টার্গেট করা হয়েছিল। কিন্তু অর্থবর্ষ শেষ হওয়ার প্রায় ৪ মাস আগেই বাজেটের থেকে ২ শতাংশ বেশি কর্মদিবস তৈরি হয়েছে এই জেলায়। অর্থাৎ করোনা পরিস্থিতিতে বাজেটে নির্ধারিত লক্ষমাত্রা পূরণ করতে অনেকে হিমশিম খাচ্ছে সেখানে আলিপুরদুয়ার ১০২ শতাংশ কর্মদিবস তৈরি করেছে।
[আরও পড়ুন : ফের বাংলায় একদিনে আক্রান্তের চেয়ে করোনাজয়ীর সংখ্যা বেশি, এখনও চিন্তায় রাখছে কলকাতা]
৩১ অক্টোবর ২০২০ পর্যন্ত এই জেলায় মোট ১ কোটি ১২ লক্ষ ৮২ হাজার ৮৪৩টি শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে। জেলায় মোট ৬৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েতে গড়ে ১ লক্ষ ৭০ হাজার ৯৫২ শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে। প্রত্যেক গ্রাম পঞ্চায়েতের নিরিখে এই পরিসংখ্যানও গোটা দেশে সেরা বলে দাবি করছে আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসন।
আলিপুরদুয়ার জেলায় মোট ছয়টি ব্লক। প্রত্যেক ব্লকে গড়ে ১৫ লক্ষ শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে। জেলার কালচিনি ও ফালাকাটা ব্লকে ২০ লক্ষের বেশি শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে। জেলাতে চলতি আর্থিকবর্ষে ৩১ অক্টোবর ২০২০ পর্যন্ত মোট ২ লক্ষ ৫১ হাজার ৮৫টি পরিবার কাজ পেয়েছে। ২০১৪ সালে আলিপুরদুয়ার জেলা গঠনের পর এই প্রথম এত বেশি সংখ্যায় পরিবারকে এই প্রকল্পে কাজ দেওয়া হল। প্রত্যেক গ্রাম পঞ্চায়েতে গড়ে ৩৮০৪টি পরিবারকে এই প্রকল্পে কাজ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক পরিবার গড়ে ৪৪.৯৫ দিন কাজ পেয়েছে।
[আরও পড়ুন : কবে থেকে খুলবে রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়? সম্ভাব্য সময়সূচি জানালেন শিক্ষামন্ত্রী]
গোটা দেশে আলিপুরদুয়ার জেলার এই সফলতা নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে। চলতি আর্থিকবর্ষে এই প্রকল্পে আলিপুরদুয়ার জেলা মোট ৩৫০ কোটি টাকা খরচ করেছে। কোভিড পরিস্থিতিতে সমস্ত সতর্কতা মেনে আলিপুরদুয়ার জেলার এই সফলতা বিভিন্ন মহলে আলোচিত হচ্ছে। আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মীনা বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জেলাস্তর পর্যন্ত এই প্রকল্পে আমাদের সব অফিসার ও সরকারি কর্মীরা খুব ভালো কাজ করেছেন। জেলার সাধারণ নাগরিকরাও আমাদের এই কাজে খুব সহযোগিতা করেছেন। আমি সকলকেই ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই সফলতা কারও একার নয়। সকলের সন্মেলিত প্রচেষ্টায় আমরা এই সাফল্য অর্জন করেছি। আগামী দিনে আরও ভালো কাজ করতে হবে। প্রচুর পরিযায়ী শ্রমিকদের এই প্রকল্পে কাজ দেওয়া হয়েছে।”