কৃশানু মজুমদার: দেড় দিনে শেষ হচ্ছে কোনও টেস্ট ম্যাচ, স্মরণকালের মধ্যে এমন দৃশ্য কি দেখেছে ক্রিকেটবিশ্ব! বৃহস্পতিবারের কেপটাউন সেটাই দেখল। মাত্র ৬৪২ বলে খেল খতম। ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে ‘ছোট’ টেস্ট ম্যাচ হিসেবে নজির গড়ল ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাট-বলের এই লড়াই। সেঞ্চুরিয়নের বদলা কেপটাউনে এসে নিল রোহিত শর্মার দল।
তাঁর সঙ্গে যখন যোগাযোগ করা হল, তখন জশপ্রীত বুমরাহর বিস্ফোরণে দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংস সদ্য শেষ হয়েছে। স্কোরবোর্ড বলছে ৭৯ রান করলেই দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা ফিরিয়ে আনবে টিম ইন্ডিয়া। বিদেশের মাটিতে টেস্ট জয় নিঃসন্দেহে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য ভালো খবর। কিন্তু তিনি, অ্যালান ডোনাল্ড (Allan Donald) যে কেপটাউন টেস্ট দেখে রাগে ফুঁসছেন। বলা ভালো কেপটাউনের বাইশ গজ দেখে তিনি ক্ষুব্ধ। কোনও রকম ভনিতা না করেই দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন পেসার ডোনাল্ড বলে দিলেন, ”এত বিশ্রী কেপটাউনের পিচ দীর্ঘদিন দেখিনি।”
ক্রিকেটজীবনে কেপটাউনের বাইশ গজে তিনি আগুন জ্বালিয়েছেন। বল হাতে বিপক্ষকে দুরমুশ করেছেন। ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা তাঁর গোলগুলির সম্মুখীন হয়েছেন। ১৯৯২ সালে ভারতীয় দলের বিরুদ্ধে তৃতীয় টেস্টে ১২টি উইকেট নিয়েছিলেন ডোনাল্ড। কেপটাউনের টেস্ট দেখতে দেখতে ডোনাল্ড নিশ্চয় স্মৃতির সরণী ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন তাঁর ফেলে আসা দিনগুলিতে। সেই সময়ে শচীন বনাম ডোনাল্ডের ব্যাট-বলের দ্বৈরথ ছিল দেখার মতো।
[আরও পড়ুন: ‘বিমানে ওঠার সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকা অল আউট, বাড়ি এসে দেখি…’, বিস্মিত শচীনের পোস্ট ভাইরাল]
একসময়ে শচীনের সঙ্গে ডোনাল্ডোর লড়াই নিয়ে কত কালিই না খরচ হয়েছে সংবাদপত্রে। কিংসমিডে শচীনের সেই অফস্টাম্প ছিটকে দেওয়ার মুহূর্ত এখনও ক্রিকেটপ্রেমীদের স্মৃতিতে উজ্জ্বল। ‘হোয়াইট লাইটনিং’ বলে পরিচিত ডোনাল্ডের স্লোয়ার আগে পড়ে নিয়েই ওয়ানডেতে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন রাহুল দ্রাবিড়। তার পরে দ্রাবিড়ের দিকে তেড়ে গিয়েছিলেন ডোনাল্ড।
একসময়ের শচীন-দ্রাবিড়ের কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড কেপটাউন টেস্টের সহজ ব্যাখ্যা দিয়ে বলছেন, ”সিমাররা ৬ উইকেট তুলছে, স্কোর কম হচ্ছে। যা পরিষ্কার বুঝিয়ে দিচ্ছে পিচটা মোটেও সুবিধার নয়। ভারত হয়তো সামলে নেবে, কিন্তু জেতাটাও খুব সহজ হবে না। ব্যাট-বলের সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য এই পিচ মোটেও আদর্শ নয়।”
ডোনাল্ড বলেছেন, ভারত ম্যাচটা হয়তো জিতেও যাবে, তবে কাজটা খুব সহজ হবে না তাঁদের। ভুল কিছু বলেননি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন পেসার। এই ৭৯ রান তুলতে ভারতকে হারাতে হয় তিন-তিনটি উইকেট।
দেড় দিনের কাছাকাছি সময়ে শেষ হচ্ছে কোনও টেস্ট ম্যাচ। এটা কি খুব ভালো বিজ্ঞাপন? ডোনাল্ড অবশ্য সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে খুব একটা উৎসাহ দেখালেন না। বললেন, ”আমি একটু ব্যস্ত বন্ধু। পরে কথা হবে।”