সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শরীরী নয়, এক অশরীরীর প্রেমে বুঁদ ছিলেন তিনি। প্রেতাত্মাকে ভালবেসে বিয়েও করেছিলেন, সংসার পাতবেন বলে। কিন্তু টিকল না সেই প্রণয়। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই পানসে হয়ে গেল সম্পর্ক। মিইয়ে গেল উৎসাহ, উত্তেজনা। তাল কাটল সুরেলা তানের। পরস্পরকে বলা সেই ‘আই ডু’-এর ধনুকভাঙা পণের তার গেল ছিঁড়ে।
অগত্যা…বিয়েও গেল ভেঙে!
আজ্ঞে হ্যাঁ। বছরের গোড়ায় রীতিমতো ঢাক ঢোল (পড়ুন আইরিশ ফ্লুট, ব্যাঞ্জো) পিটিয়ে বিয়ের ঘোষণা করেছিলেন আয়ারল্যান্ডের বাসিন্দা আমান্দা তিয়াগে। কারণ, তাঁর স্বামীরত্নটি তো আর সাধারণ কেউ ছিলেন না! একে বিদেহী, তার উপর জলদস্যু! তার উপর আবার তার বয়স তিনশো বছরের উপর। এমনই এক ১৮ শতকের জলদস্যু প্রেতাত্মার (নাম জ্যাক) সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন আমান্দা। এই বছরেরই শুরুর দিকে একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানে একে অন্যকে আংটি পরিয়ে ‘জনম-জনম’ এক সঙ্গে কাটানোর প্রতিজ্ঞাও করেছিলেন দু’জন। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বেসুরো হয়ে গেল সব কিছু। সম্পর্কের রসায়ন এতটাই তিক্ত হয়ে পড়ল যে প্রেতাত্মা স্বামী ‘জ্যাক’কে ‘ডিভোর্স’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন ৪৬ বছরের আমান্দা। সংবাদমাধ্যমকে ডেকে বিচ্ছেদের সার্বজনীন ঘোষণাও করে দিলেন তিনি। সাফ সাফ বলে দিলেন, “দ্য ম্যারেজ ইজ ওভার।’’
[ প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা, সরে দাঁড়ালেন রাজাপক্ষে ]
কিন্তু কেন? কেন এই বিচ্ছেদ?
তার হদিশ পেতে হলে আগে উদ্ধার করতে হবে সম্পর্কে জড়ানোর রহস্য। কি এমন ঘটল যে ‘জ্যান্ত’ সঙ্গীদের সরিয়ে প্রাণহীন আত্মাকে জীবনসঙ্গী হিসাবে বেছে নিলেন আমান্দা? কীভাবে ঘটল দু’জনের প্রণয়? পাঁচ সন্তানের জননী, আমান্দা কী দেখে ‘হ্যাঁ’ বললেন হাইতির এই জলদস্যুকে? আইরিশ এই মহিলার উত্তর, বছর দু’য়েক আগে জ্যাকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে। তিনি সেই সময় ঘুমোচ্ছিলেন। তাঁকে ঘুম থেকে তুলিয়ে নিজের পরিচয় দেন জ্যাক। তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। দিন কয়েক পর জ্যাকই প্রথমে প্রেম নিবেদন করেন তাঁকে। প্রথমে এই অদ্ভুতুড়ে প্রস্তাবে ‘হ্যাঁ’ বলেননি আমান্দা। কিন্তু পরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই জলদস্যু সঙ্গীর প্রেমে পড়ে যান তিনি নিজেও। টানা দু’বছর তারা ‘ডেটিং’ করেন। অনেকটা সময় এক সঙ্গে কাটান। আমান্দার দাবি, এর আগে ‘মানব’ জীবনসঙ্গীর সঙ্গে ছ’বছর দাম্পত্য কাটিয়েছিলেন তিনি। পরে ‘ভূত’সঙ্গীর সঙ্গেও বিবাহ-বন্ধনে বাঁধা পড়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সেই বিয়েরও শেষ পর্যন্ত না টেকার কারণ, আমান্দার মতে-মতের মিল না হওয়া। আইরিশ এই মহিলা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিদেহী ‘জ্যাক’-এর সঙ্গে তাঁর বৈবাহিক জীবন ঠিকমতো চলছে না। এর কারণ কী যৌনতার সঙ্গে যুক্ত? আমান্দার দাবি, বিষয়টি একেবারেই তা নয়। তাদের যৌন জীবনে কোনও খামতি ছিল না। তাহলে? ৪৬ বছর বয়সি আইরিশ মহিলার দাবি, সময় এলে গোটা ঘটনা তিনি বিশদে জানাবেন। তবে একটি বিষয় তিনি জনস্বার্থে ‘শেয়ার’ করতে চান। আর তা হল একটি সতর্কবার্তা। আমান্দা সকলকে জানাতে চান, তাঁর মতো যদি আর কেউ কোনও প্রেতাত্মার সঙ্গে প্রেমের ভেলায় ভাসতে চান, তাহলে এ বিষয়ে যথেষ্ট সাবধনতা তাকে অবলম্বন করতে হবে। নচেৎ না এগনোই ভাল।
[ মায়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যাই হয়েছে, সাফ জানাল মার্কিন কংগ্রেস ]