সৌরভ মাজি, বর্ধমান: রোজদিন নিয়ম করে লটারির (Lottery) টিকিট কাটেন, কিন্তু রোজই হতাশা ছাড়া কিছুই জোটে না। তবে বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাগ্যের চাকা এভাবে ঘুরে যাবে, কে জানত? অভ্যাসমতো দুপুর দেড়টা নাগাদ লটারির ফলাফল জানতে মোবাইলটা অন করেছিলেন বর্ধমানের (Burdwan) শেখ হিরা। তারপর আর নিজের চোখকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। মোবাইলের স্ক্রিনে জ্বলজ্বল করছে তাঁরই নম্বর। প্রথম পুরস্কার – এক কোটি টাকা জিতেছেন তিনিই! দেখে কার্যত দিশাহারা হয়ে শেখ হিরা সটান হাজির হন থানায়। পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চান। জানতে চান, কোটি টাকা জিতেছেন লটারিতে, এখন তিনি কী করবেন? ধাতস্থ হয়ে হিরা মনস্থির করেছেন, সবার আগে মায়ের চিকিৎসা করাবেন ভালভাবে।
বৃহস্পতিবার সকালে অন্যান্য দিনের মতোই পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড় থানার বাম এলাকার বাসিন্দা শেখ হিরা লটারির টিকিট কাটেন। মোট ২৭০ টাকার টিকিট কেটেছিলেন তিনি। দুপুর ১ টা থেকে খেলা হয়, পনেরো মিনিটের মধ্যেই ফলাফল জানা যায়। অনলাইনে (Online) নম্বর মেলাতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ হিরার! কল্পনাই করতে পারেননি যে তিনিই প্রথম পুরস্কার জিতেছেন। রেজাল্টে নিজের নম্বর দেখেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না কিছু সময় ধরে।
[আরও পড়ুন: প্রেমিকার বিরহ! নাওয়াখাওয়া ভুলে ১৪ বছর অন্ধকার ঘরেই কাটিয়ে দিল যুবক]
হিরা জানান, অ্যাম্বুল্যান্স চালিয়ে কোনওক্রমে সংসার চলে তাঁর। বাড়িতে অসুস্থ মা। একদিন অনেক টাকা হবে, সংসারের অভাব দূর হবে – সেই স্বপ্ন দেখতেন। আর সেই আশাতেই লটারির টিকিট কাটতেন তিনি। যদি কোনওদিন মোটা টাকা জিততে পারেন। রোজই ভাবতেন, আজ ভাগ্যের চাকা ঘুরবে। কিন্তু হতাশ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার হিরার কপাল খুলে গেল। একেবারে কোটিপতি শেখ হিরা। তিনি বলেন, “কোটি টাকা জেতার আশাতেই টিকিট কাটতাম। কিন্তু কোটি টাকা জেতার পর বুঝতে পারছিলাম না কী করা উচিত। তাই থানায় চলে যাই পরামর্শ নিতে।”
[আরও পড়ুন: সৌজন্যের নজির! দুর্ঘটনায় জখম সায়ন্তিকাকে দেখতে ফুল হাতে সার্কিট হাউসে বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক]
চিন্তিত অবস্থায় শেখ হিরাকে থানায় দেখে পুলিশ তাঁকে প্রথমে শান্ত করে বসায়, জল খেতে দেয়। তারপর পুলিশ কর্মীরা তাঁকে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেন। হিরার বাড়িতে মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিশবাহিনী। শেখ হিরা জানাচ্ছেন, লটারিতে পাওয়া এই টাকা দিয়ে ভালভাবে মায়ের চিকিৎসা করাতে চান তিনি। আর তারপর একটি বাড়ি করার ইচ্ছা রয়েছে হিরার। শেখ হানিফের কাছ থেকে টিকিট কেটেছিলেন হিরা। হানিফ বলেন, “বহু বছর ধরে টিকিটের ব্যবসা করছি। অনেকেই টিকিট কাটেন। এত বড় পুরস্কার আমার দোকান থেকে আগে কখনও ওঠেনি। আজ আমি এমন পুরস্কার দিতে পেরে খুবই খুশি।”