অর্ণব দাস, বারাসত: আমডাঙার (Amdanga) পঞ্চায়েত প্রধান রূপচাঁদ মণ্ডল খুনের তদন্তে একাধিক দিক নজরে আসছে তদন্তকারীদের। প্রাথমিকভাবে পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ অনুযায়ী, জমি বিবাদের জেরেই খুন বলে মনে করা হলেও বেশ কিছু তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারীদের নজরে তাঁর সঙ্গে দলের সম্পর্কের বিষয়টি। তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব, ফের ঘনিষ্ঠতা – এসবও কি খুনের কারণ? তা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।
জানা যাচ্ছে, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election) রূপচাঁদ নির্দল প্রার্থী হয়ে সোনাডাঙা এলাকা থেকে জয়ী হন। তার কিছুদিনের মধ্যেই তিনি আবার তৃণমূলে (TMC) ফেরেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও একই বুথ থেকে জিতেছিলেন রূপচাঁদ মণ্ডল। এর পর রূপচাঁদ প্রধান হন। আমডাঙার বিধায়ক রফিকুর রহমান অভিযোগ করেন, সেক্ষেত্রে দলের হুইপ মানা হয়নি। প্রধান নির্বাচনে লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়েছে। সেই সময় বিধায়কের অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছিলেন রূপচাঁদ। তবে, এদিন মৃত দলীয় নেতার বাড়িতে এসে বিধায়ক রফিকুর রহমান বলেন, “মতবিরোধ ছিল ঠিকই। কিন্তু প্রধান হওয়ার পর বিরোধ ভুলে ওকে আমি বুকে টেনে নিয়েছিলাম। আমার পরামর্শ মেনেই সে কাজ করত।”
[আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটে নিহতদের পরিবারকে চাকরি, মমতার ঘোষণায় সিলমোহর মন্ত্রিসভার]
এদিকে, অভিযুক্ত তোয়েবের প্রসঙ্গে নিহত নেতার স্ত্রী সুরুফা বিবি বলেন, “কয়েক বছর আগেও তোয়েবের সঙ্গে আমার স্বামীর সম্পর্ক ভালো ছিল। তোয়েব আমাদের বাড়িতেও আসত। কিন্তু তোয়েবের সঙ্গে কী নিয়ে ঝামেলা হয়েছে, সেকথা রূপচাঁদ আমাকে কোনওদিন বলেনি। আমার স্বামীকে যারা খুন করেছে, তাদের কঠোর শাস্তি চাই।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, আমডাঙার বোদাই পঞ্চায়েতের খড়িগাছি এলাকা বাসিন্দা তোয়েব হোসেন এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবেই পরিচিত। পাশাপাশি জমির কারবারের সঙ্গে যুক্ত। আমডাঙার সন্তোষপুর এলাকায় রূপচাঁদ এবং তোয়েব হোসেন একসঙ্গে জমি কিনেছিলেন। এই জমি নিয়েই দু’জনের বিবাদ বাঁধে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী হাবড়া ২ পঞ্চায়েতের দিঘরা-মালিকবেরিয়া এলাকায় একটা জমিকে কেন্দ্র করেও রূপচাঁদের সঙ্গে স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্যের বিরোধ ছিল বলেও জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: জ্ঞানবাপীর বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা শেষ হয়নি, আদালতের কাছে আরও ১৫ দিন সময় চাইল ASI]
বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং জানান, ”পুরনো কোনও শত্রুতা নিশ্চয়ই আছে, যার জন্য রূপচাঁদকে খুন হতে হল।” চারজনের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতকে জেরা করে অপর অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এদিন ঘটনাস্থল সংলগ্ন এলাকা থেকে তিনটি বোমা উদ্ধার হয়েছে। জমি সংক্রান্ত বিবাদ, ব্যক্তিগত শত্রুতা না কি খুনের পিছনে রাজনৈতিক কোনও কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
দেখুন ভিডিও: