সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য পাঁচ দেশ---আমেরিকা, চিন, ফ্রান্স, রাশিয়া ও ব্রিটেন। গত কয়েক বছর ধরেই এর অংশ হওয়ার দাবি জানাচ্ছে ভারত। বিভিন্ন সময় রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলির সমর্থনও পেয়েছে ভারত। ফের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ার বিষয়ে ভারতকে সমর্থন জানাল আমেরিকা। যদিও প্রশ্ন উঠছে, বাইডেনের এই সমর্থন নেহাত খুড়োর কল নয় তো?
রবিবার কোয়াড সম্মেলনে অংশ নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, অস্ট্রেলিয়ার অ্যান্টনি আলবেনিজ, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি। সেখানেই নিজের বক্তব্যে ভারতের হয় সওয়াল করেন বাইডেন। তাঁর বক্তব্য, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংশোধন জরুরি। ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ, দেশটির গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বরকে সমর্থন করে আমেরিকা। পাশাপাশি জি-২০ এবং গ্লোবাল সাউথে প্রধানমন্ত্রী মোদির ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং সাম্প্রতিক সময়ে মোদির পোল্যান্ড ও ইউক্রেন সফরের কথাও তুলে ধরেন বাইডেন। এর পরেই রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের বিষয়ে কথা বলেন তিনি। ভারতের বিরাট জনসংখ্যা, অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা ও কূটনীতিতে সক্রিয় ভূমিকার কথা তুলে ধরেন বাইডেন।
এর পরেও আমেরিকার সমর্থন নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ বিশ্লেষকদের মতে, ওয়াশিংটন ভালোই জানে, যে ভারতের উপর কোনও নীতি চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে সেই আশঙ্কাই আরও মজবুত করেছে নয়াদিল্লি। কার্যত চিন ও ভারত রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পাশে দাঁড়ানোয় মস্কোকে একঘরে করার আমেরিকা পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছে। একই সঙ্গে ভারত-মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের সঙ্গে সংঘাত বাঁধলে ভারত যে নিঃশর্ত ভাবে মার্কিন ফৌজকে সুবিধা করে দেবে, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। কারণ রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত মজবুত। তাই সংঘাতে আমেরিকার পাশে দাঁড়িয়ে রাশিয়াকে কার্যত চিন বলয়ে পুরোপুরি কখনই ঠেলে দেব না ভারত।
এছাড়াও ভারতের হাতে ভেটো ক্ষমতা দিলে তা বুমেরাং হতে পারে বলে আশঙ্কা ওয়াশিংটনের। এর কারণ, ভূকৌশলগত নীতি এবং সময়ের দাবি মেনে তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে আমেরিকার বিরুদ্ধেই ভেটো প্রয়োগ করতে পারে ভারত। সব মিলিয়ে আমেরিকার সমর্থন সংশয় থেকেই যাচ্ছে।