সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটমুখী গুজরাটে লড়াইয়ের সুর বেঁধে দিলেন বিজেপির ‘চাণক্য’ অমিত শাহ। এবারও যে ‘মেরুকরণ’ গেরুয়া শিবিরের তুরুপের তাস হতে চলেছে তা ইঙ্গিতে স্পষ্ট করে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রবিবার এক সরকারি কর্মসূচিতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ‘মুসলিম তোষণের’ অভিযোগ এনে শাহ বলেন, “রথযাত্রায় যারা হামলা চালিয়েছিল, তারা এখন জেলে বসে জগন্নাথ জগন্নাথ বলছে।”
রবিবার গুজরাটের খেরা থেকে ভারচুয়ালি রাজ্যের ২৫টি জেলায় পুলিশবাহিনীর জন্য ৫৭টি আবাসন ও অফিস কমপ্লেক্স উদ্বোধন করেন অমিত শাহ (Amit Shah) । ওই অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংভি, ডিজিপি আশিস ভাটিয়া-সহ অনেকেই। এদিন নিজের ভাষণে কংগ্রেসকে একহাত নিয়ে শাহ বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে ও সাম্প্রদায়িক হিংসা রুখতে ব্যর্থ হয়েছিল কংগ্রেস। তারা যখন ক্ষমতায় ছিল প্রভু জগন্নাথের রথযাত্রায় হামলা হয়েছিল। আর আজ, রথযাত্রায় যারা হামলা চালিয়েছিল, তারা এখন জেলে বসে জগন্নাথ-জগন্নাথ বলছে। কিন্তু যবে থেকে গুজরাটে বিজেপি ক্ষমতা এসেছে এবং মুখ্যমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদি বসেছেন এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি।”
[আরও পড়ুন: কৃষক সম্মেলনে চরম বিশৃঙ্খলা, রাকেশ টিকাইতের মুখে মাখানো হল কালি]
আগামী ডিসেম্বরে গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে। তাই ভোটমুখী গুজরাটে লড়াইয়ের সুর বেঁধে দিলেন বিজেপির ‘চাণক্য’ অমিত শাহ। এবারও যে ‘মেরুকরণ’ গেরুয়া শিবিরের তুরুপের তাস হতে চলেছে তা এদিন ইঙ্গিতে স্পষ্ট করে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, “বহু বছর ধরে সামাজিক বিভেদ তৈরি করেছে কংগ্রেস। তারা সাম্প্রদায়িক হিংসাকে উসকানি দিয়েছে। ফলে বছরের ২০০ দিন রাজ্যে কারফিউ থাকতো। কোনও গ্যারান্টি ছিল না যে একজন লোক সকালে কাজ থেকে বের হয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরবে কি না। ব্যাংক, বাজার এবং কারখানা বন্ধ হওয়ার ফলে অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়েছিল। কিন্তু ক্ষমতায় এসে তোষণের রাজনীতি না করেই রাজ্যে শান্তি ফিরিয়েছে বিজেপি।”
উল্লেখ্য, নির্বাচনী আবহে কংগ্রেস ছেড়েছেন প্রভাবশালী পাতিদার নেতা তথা গুজরাত প্রদেশ কংগ্রেসের প্রধান হার্দিক প্যাটেল (Hardik Patel)। হার্দিকের মতো প্রথমসারির নেতার এমন সিদ্ধান্তে যে কংগ্রেসের উপরে চাপ বাড়ল তাতে সন্দেহ নেই। বছরের শেষেই গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে হার্দিক দল ছাড়ার অর্থই সংগঠনে ফাটল ধরছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, গত সপ্তাহেই দু’দিনের সফরে গুজরাট যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, পাতিদার গোষ্ঠীকে কাছে টানতেই মোদির এই সফর। সেখানে নিজের ভাষণে পাতিদার গোষ্ঠীরই প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন তিনি। সবমিলিয়ে গুজরাট নির্বাচন নিয়ে বিজেপির ব্লুপ্রিন্ট যে কোন দিকে ইঙ্গিত করছে তা স্পষ্ট।