বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: ভোটে বাংলার মানুষের মন পেতে রাজ্য সংগঠনের শীর্ষস্তরে রদবদলের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আর দিল্লির (Delhi) সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে সকলকে। বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও সাংসদ দিলীপ ঘোষকে সাফ জানিয়ে দিলেন অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা ও বিএল সন্তোষরা। কারণ, পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election) নিয়ে বঙ্গ বিজেপি যে রিপোর্ট দিয়েছে তার সঙ্গে সংঘ পরিবারের রিপোর্টের ফারাক বিস্তর। সংঘের দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মুহূর্তে রাজ্যে ভোট হলে চার থেকে পাঁচটি আসন গেরুয়া শিবিরের ঝুলিতে আসতে পারে। গতবারের তুলনায় ১৩ থেকে ১৪টি আসন কমে যাবে। লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election) আগে সংগঠনে নজর না দিলে গতবারের ধারে কাছেও দলের ফল যাবে না বলে সংঘের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। এরপরই বঙ্গ নেতৃত্বকে তলব করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
সোমবার দুপুরে দিল্লি দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপির (BJP) নতুন কার্যালয়ে সংঘের সমন্বয় বৈঠকে হাজির ছিলেন বঙ্গের প্রতিনিধিরা। ছিলেন বিএল সন্তোষ ছাড়া সংঘের অন্যান্য শীর্ষ কার্যকর্তাও। রাত ৯টা নাগাদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) বাসভবনে গিয়ে বৈঠক করেন তাঁরা। যদিও গোটা বিষয়টি দল ও সংগঠনের তরফে গোপন রাখা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ইডির আপত্তি, অভিষেকের মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন হাই কোর্টের বিচারপতি]
সম্প্রতি গ্রাম বাংলার ভোটে ফলাফলের পর্যালোচনা করতে গিয়ে একে অপরের পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। ২০১৮ সালের তুলনায় এবার দ্বিগুণ সংখ্যক আসন পাওয়া গিয়েছে বলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হয়। প্রাথমিকভাবে দিল্লির নেতাদের হাততালি কুড়লেও সংঘের রিপোর্ট আসতেই মাথায় হাত পড়ে অমিত শাহ, জেপি নাড্ডাদের। এবারে বাংলার পঞ্চায়েত ভোটে সংঘ পরিবার সেভাবে ঘাম ঝরায়নি। সংঘের নীরবতায় রাজ্য বিজেপির হাল কী হতে পারে, পঞ্চায়েত ভোটে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। এরপরেই নড়েচড়ে বসে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। প্রথমে সংঘ কর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক করেন শুভেন্দু, সুকান্ত, দিলীপ ঘোষ, অমিতাভ চক্রবর্তীরা। রাজ্যের সংঘ নেতৃত্বের সঙ্গে ঘনঘন বৈঠক করে সংগঠনের ফাঁকফোকর পূরণ করতে হবে বলে বঙ্গ নেতৃত্বকে নির্দেশ দেওয়া হয়। নিচুস্তর পর্যন্ত সমন্বয় বৈঠকের সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: ড্র দ্বিতীয় টেস্ট, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সিরিজ জয় রোহিত ব্রিগেডের]
রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার পাশাপাশি সাংগাঠনিক বিষয় নিয়ে কথা হয়। সেখানেই শাহ সংগঠনের শীর্ষস্তরে বদলের ইঙ্গিত দেন। লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়েই কড়া সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছেন বলে শুভেন্দু, সুকান্তদের জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, এমনই খবর সূত্রের।