রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: রাজ্যে শাসকদলের প্রার্থীতালিকা প্রকাশের পর এবার জোর তৎপরতা গেরুয়া শিবিরেও। চলতি সপ্তাহেই বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে খবর। তবে ৪২টি কেন্দ্রের একেবারে না প্রকাশ করে কয়েক দফাতেও দলের প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করতে পারে বিজেপির সংসদীয় কমিটি। প্রার্থীতালিকায় বেশ কিছু নতুন মুখ যেমন থাকছে, তেমনই অন্য রাজনৈতিক দল থেকে সদ্য গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়া বেশ কয়েকজনকেও প্রার্থী করতে চলেছে পদ্ম শিবির। দলীয় সূত্রে খবর, জেতার ক্ষমতা রয়েছে এরকমদেরই প্রার্থী করা হবে। এটা দিল্লির বৈঠক বঙ্গ নেতাদের স্পষ্ট করে দিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। অর্থাৎ, তৃণমূল-সিপিএম কিংবা কংগ্রেস থেকে আসা জেতার ক্ষমতা রয়েছে এরকম হেভিওয়েট কাউকে বিজেপির প্রার্থী করা নিয়ে দলের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও সেটাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে না বলেই স্পষ্ট করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বাছবিচার পরে। যার জেতার ক্ষমতা রয়েছে তাকেই প্রার্থী করা হবে। সে যে বিরোধী দলেরই হোক। দলের নীতি-আদর্শের সঙ্গে পরে তাকে খাপ খাইয়ে নেওয়া হবে। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও জানিয়েছেন, আগে জিততে হবে। সরকার গড়তে হবে। এটাই এখন নীতি। তা স্পষ্ট করে দিয়েছে অমিত শাহ। পার্টির দরজা খোলা আছে সকলের জন্য।
মঙ্গলবার দিল্লিতে কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে পদ্ম শিবিরে যোগ দিয়েছেন বোলপুরের বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদ অনুপম হাজরা-সহ বনগাঁর কংগ্রেস বিধায়ক দুলাল বর ও মালদহের হবিবপুরের সিপিএম বিধায়ক খগেন মুর্মু। অনুপম হাজরার যোগ দেওয়াটা ছিল সময়ের অপেক্ষা। দল বিরোধী কাজকর্মের জন্য আগেই তাঁকে বহিষ্কার করেছিল তৃণমূল। অন্যদিকে, দুলাল বর বেশ কিছুদিন ধরেই বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। তাঁর যোগদানটাও খুব একটা অপ্রত্যাশিত নয়। তবে সিপিএম বিধায়ক খগেন মুর্মুকে দলে টেনে বাম শিবিরকে একটা বড়সড় ধাক্কা দিয়েছে গেরুয়া শিবির। খগেন মুর্মুকেই মালদহ উত্তর কেন্দ্রে প্রার্থী করে চমক দিতে পারে বিজেপি। বোলপুরে অনুপম হাজরার নাম রয়েছে। বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে দুলাল বরকেই প্রার্থী করার কথা ভাবা হচ্ছে। যদিও ওই কেন্দ্রে শান্তনু ঠাকুরের নামও ঘোরাফেরা করছে। বিষ্ণুপুরে সৌমিত্র খাঁকেই প্রার্থী করা হচ্ছে। সদ্য যোগ দেওয়া মৌসুমি চট্টোপাধ্যায় ও তৃণমূল থেকে আসা আর এক নেতাকেও প্রার্থী করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। জেতা আসন আসানসোল ও দার্জিলিংয়ে প্রার্থী বদল হচ্ছে না বলেই খবর। সূত্রের খবর, গত বিধানসভায় প্রার্থী হওয়ায় দলের তিন সেলিব্রিটি নেতা-নেত্রী প্রার্থী হতে পারেন। প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন তিনজন রাজ্য সহ-সভাপতি, দু’জন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক।
[তৃণমূলের প্রার্থীতালিকায় ফের চমক, যাদবপুরে মিমি এবং বসিরহাটে লড়বেন নুসরত]
প্রার্থীতালিকা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বাংলায় ভোটের প্রচার নিয়েও সোমবার দিল্লির বৈঠকে অমিত শাহ কথা বলেছেন বঙ্গ নেতাদের সঙ্গে। ১১ এপ্রিল প্রথম দফার ভোট শুরুর আগেই বাংলায় আসছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তিনি চার জায়গায় ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে সাংগঠনিক বৈঠক করবেন। এরপর ভোটপর্ব চলাকালীন নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ জুটি মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় কুড়িটি জনসভা করবেন। লোকসভা নির্বাচন নিয়ে সোমবার দিল্লিতে অমিত শাহ-র সঙ্গে বৈঠক করেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেনন, দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহা, মুকুল রায় প্রমুখ নেতৃত্ব।
[লোকসভায় তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়-মালা রায়, ঘোষণা মমতার]