অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: ডাইনি অপবাদে প্রতিবেশীর উপর অত্যাচারের প্রতিবাদের জের! প্রাণ গেল বৃদ্ধের। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে খড়গপুর গ্ৰামীণ থানার খড়গপুর (Kharagpur) ২ নম্বর ব্লকের পলশা উত্তর জগৎপুর গ্ৰামে। ইতিমধ্যেই বৃদ্ধকে খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
মৃতের নাম দুর্গাপদ টুডু। খড়গপুর গ্ৰামীণ থানার খড়গপুর ২ নম্বর ব্লকের পলশা উত্তর জগৎপুরের বাসিন্দা তিনি। অন্যান্যদিনের মতোই বুধবার সন্ধেয় স্ত্রীকে নিয়ে মাছ আনতে গিয়েছিলেন তিনি। দেরি হওয়ায় স্ত্রীকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। একাই বাড়ি ফেরার কথা ছিল বৃদ্ধের। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ পেরিয়ে গেলেও ফেরেননি। এরপরই বৃদ্ধের খোঁজে বের হয় ছেলেরা। তাঁদের নজরে পড়ে চাপ চাপ রক্ত। এরপরই বাবার সঙ্গে থাকা হাড়িটি দেখতে পান তাঁরা। খানিকটা দূর থেকে উদ্ধার হয় বৃদ্ধের ক্ষতবিক্ষত দেহ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় খড়গপুর থানার পুলিশ। তাঁরা দেহ উদ্ধারের চেষ্টা করলে বাধা দেন স্থানীয়রা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
[আরও পড়ুন: Coronavirus Update: গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত ৭৭১, মৃত্যু ১৩ জনের]
স্থানীয়রা জানায়, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার না করা হলে দেহ উদ্ধার করা যাবে না। এরপর রাতেই বৃদ্ধে খুনে জড়িত সন্দেহে কয়েকজনের বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। মৃতের ছোট ছেলে বৃহস্পতিবার সকালে মোট বারোজনের বিরুদ্ধে বাবাকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই গ্রেপ্তার করা হয় রবীন সোরেন, সঞ্জয় মাণ্ডি ও গোবিন্দ মাণ্ডি নামে তিনজকে। মৃতের ছেলের অভিযোগ, ধৃতরা পরিকল্পনামাফিক খুন করেছে তাঁদের বাবাকে।
কী কারণে এই খুন? মৃতের ছেলেরা জানিয়েছেন, কয়েকমাস আগে গ্রামের এক পরিবারের জামাইকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে হেনস্তা করা হয়েছিল। শেষমেশ তাঁদের গ্রামছাড়া করা হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদ করেছিলেন দুর্গাপদবাবু। সেই আক্রোশেই এই আক্রমণ। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খড়গপুর) রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, “বৃদ্ধকে খুন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্ৰাম্য বিবাদের জেরে এই খুন হয়েছে। তবে ঠিক কী ধরনের গ্ৰাম্যবিবাদ সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”