সৌরভ মাজি, বর্ধমান: জোর করে বসতবাড়ি লিখিয়ে নিয়েছিল। এখন আবার একমাত্র সম্বল ছোট্ট দোকানঘরটিও হাতাতে চায়। তা না পেয়ে অকথ্য অত্যাচার চালাচ্ছে পুলিশ অফিসার মেয়ে। এমনকি লোহার রড নিয়ে মেয়ে ও জামাই মারধরও করছে। এমনই অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বেলা হালদার। বুধবার ওই বৃদ্ধা ডাকযোগে অভিযোগপত্র পাঠিয়েছেন।
বৃদ্ধা জানান, তাঁর মেয়ে তাপসী দত্ত ও জামাই চঞ্চল দত্ত বর্ধমানের বাম এলাকায় থাকে। কয়েকদিন আগে, মেয়ে জামাই জামালপুরে তাঁদের দোকানে এসে চড়াও হয়। লাঠি, রড দিয়ে তাঁকে মারধর করে। তাঁর ছেলে সমীর বাঁচাতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়। মা-ছেলেকে জামালপুর ব্লক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। তার পর ওই বৃদ্ধা জামালপুর থানায় মেয়ে-জামাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ এফআইআর করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। বৃদ্ধা এদিন মুখ্যমন্ত্রী, জেলা শাসক, পুলিশ সুপারের কাছে ডাকযোগে অভিযোগপত্র পাঠিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: বাংলায় জোগান কমল পদ্মার ইলিশের, ভরা বর্ষায় মাথায় হাত ভোজনরসিকদের]
তাতে বৃদ্ধা অভিযোগ করেছেন, মেয়ে পুলিশে চাকরি করার সুবাদে নানাভাবে হুমকি দেয়। বড় বড় পুলিশ অফিসারের কদা বলে তাঁদের চমকায়। এইভাবে ভয় দেখিয়ে তাঁদের বসতবাড়িটি মেয়ে নিজের নামে লিখিয়ে নিয়েছে। বর্তমানে ছেলেকে নিয়ে এক চিলতে দোকানঘরে বাস করেন। বলা বলেন, "সেই দোকানঘরটিও মেয়ে হাতিয়ে নিতে চাইছে। কয়েকদিন আগে দোকানে থাকা প্রায় ৭ লক্ষ টাকার জিনিসপত্র বের করে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে। এখন দোকানঘরটি থেকেও আমাদের বের করে দিতে চাইছে। গত ৩০ জুলাই মেয়ে-জামাই এসে রড দিয়ে আমাদের মারধর করে দোকান থেকে বের করে দেয়।" তিনি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নেমেছে।
তাপসীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিন দাবি করে বলেন, "মা ও দাদা সংসার খরচ পুরোটাই আমি চালাই। এখনও সব দায়িত্ব আমি পালন করি। মা টাকা নিয়ে বসতবাড়ির জায়গা দানপত্র করেছিল আমাকে। এরপরেও কেন এমন অভিযোগ করছে জানি না। কয়েকদিন আগেও মাকে দিঘা বেড়াতে নিয়ে গিয়েছিলাম।" তিনি আরও জানান, যে দোকানঘরের কথা বলা হচ্ছে সেটা বাবার। সেই দোকানের ওয়ারিস পাঁচজন। সকলেরই ভাগ আছে। সেটা চাওয়াতেই এই মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। জেলার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। অভিযোগ খতিয়ে দেখার পরেই নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই মহিলা এএসআই-কে মাধবডিহি থানা থেকে সরিয়ে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। পুলিশ এফআইআর করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।