দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: জ্বর হয়েছে। শুধু এই উপসর্গ দেখেই আবাসনের বাসিন্দারা ধরে নিয়েছিলেন ওই বৃদ্ধা করোনা (Coronavirus) আক্রান্ত। আর তারই জেরে রবিবার কাকভোরে উত্তরপাড়ার শিবতলা স্ট্রিটের আবাসনের চারতলা থেকে বৃদ্ধাকে নিচে নামিয়ে দিয়েছিলেন সকলে। দীর্ঘক্ষণ নিচে বসে থাকতে দেখেও কোনও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ এগিয়ে আসেননি। পরে যদিও বেশ কয়েকজন ঘটনাটি বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও উত্তরপাড়া থানায় বিষয়টি জানান। শেষ পর্যন্ত ওই জনপ্রতিনিধি এবং পুলিশের সহযোগিতায় বৃদ্ধাকে চিকিৎসা করিয়ে তাঁর চারতলার ফ্ল্যাটে ঢুকিয়ে দিয়ে যান তাঁরা।
বছর পঁয়ষট্টির ওই বৃদ্ধা চারতলার ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। একা থাকার জন্য তাঁকে বাজারঘাট নিজেকেই করতে হয়। শুক্রবার সন্ধের দিকে বৃদ্ধার জ্বর আসে। তারপর শনিবার কেটে যায়। আবাসিকদের ধারণা হয় বৃদ্ধা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বৃদ্ধার চিকিৎসার জন্য কোনো উদ্যোগ না নিয়ে তাঁকে তাঁর নিজের ফ্ল্যাট থেকে তাড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সকলে। রবিবার সকালে তাঁকে চারতলা থেকে একতলায় নামিয়ে দেওয়া হয়। তারপর অসহায়ের মতো বৃদ্ধা শুধু খুঁজে বেরিয়েছেন একটু সহানুভূতি, একটু ভালবাসা, একটু সাহায্যের হাত। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। এক সময় বৃদ্ধা ভেবেই নিয়েছিলেন খোলা আকাশের নিচেই হয়তো তাঁর মৃত্যু লেখা আছে।
[আরও পড়ুন: লাশকাটা ঘরে কাটাছেঁড়ায় সাহায্য করতেন, সেই ভাইয়েরই ময়নাতদন্তে অঝোরে কান্না দাদার]
খবর পেয়ে স্থানীয় বিদায়ী কাউন্সিলর সুব্রত মুখোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তিনি উত্তরপাড়া থানায় খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে সুব্রতবাবু উদ্যোগ নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠান। ততক্ষণে বৃদ্ধা আরও কাহিল হয়ে পড়েছেন। পুলিশ ওই বৃদ্ধাকে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে সমস্ত ধরণের পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, উনি করোনা আক্রান্ত নন। বৃষ্টিতে ভেজার কারণে ঠান্ডা লেগে জ্বর হয়েছে বৃদ্ধার। এরপর ওষুধপত্র সমেত পুলিশই ওই বৃদ্ধাকে তাঁর ফ্ল্যাটে পৌঁছে দিয়ে যায়। কোনও অসুবিধা হলে ফোন করার কথাও বলেন পুলিশের আধিকারিকরা। বিদায়ী কাউন্সিলর এবং পুলিশের আশ্বাসে আপাতত স্বস্তি পেয়েছেন ওই বৃদ্ধা।
[আরও পড়ুন: রোজ ভাঙছে সংক্রমণের রেকর্ড, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলায় করোনা আক্রান্ত প্রায় ১৬০০]
The post অমানবিক! করোনা আক্রান্ত সন্দেহে ফ্ল্যাট থেকে বৃদ্ধাকে তাড়িয়ে দিলেন প্রতিবেশীরা appeared first on Sangbad Pratidin.