অর্ক দে, বর্ধমান: ট্যাব দুর্নীতি কাণ্ডে বর্ধমান থেকে ধৃত চারজনের পরিবার এবার প্রতারণার শিকার! অভিযোগ, পরিবারের সদস্যদের ফোন করে টাকার বিনিময়ে জামিন পাইয়ে দেওয়ার 'টোপ' দিয়েছেন জনৈক আইনজীবী। এই ঘটনায় হতভম্ব পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। বুধবার বর্ধমান জেলা পুলিশ ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করার পর বৃহস্পতিবার পরিবারকে সাইবার থানায় তলব করেছিল। চারজনের মধ্যে তিনজনের মা-বাবা মালদহ থেকে বর্ধমান আসার পথে তাঁদের কাছে এক ব্যক্তির ফোন আসে। বলা হয়, ১৬ থেকে ২০ হাজার টাকা দিলে ছেলেদের জামিন একেবারে নিশ্চিত। এত টাকার কথা শুনে তাঁরা স্বভাবতই ঘাবড়ে যান। কে, কোন উদ্দেশে ফোন করল, পরিবারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সেসব খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
বর্ধমান জেলা পুলিশ ট্যাব দুর্নীতির তদন্তে নেমে মালদহ থেকে বুধবার চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় প্রকাশ্যে এসেছে - রকি শেখ, চিন্টু শেখ ও শ্রবণ সরকার। শ্রবণ মালদহের কালিয়াচকের বাসিন্দা। পুলিশ জানতে পেরেছে, তাঁর বাবা জিতেন্দ্র সরকার কালিয়াচকের তৃণমূলের এসসি সেলের সভাপতি। শ্রবণের একটি জেরক্সের দোকান আছে, পাশাপাশি একটি গোল্ড লোন সংস্থায় কয়েকমাস আগে চাকরি শুরু করেছিল। পড়ুয়াদের জন্য সরকারি প্রকল্পে দেওয়া ট্যাবের টাকা তছরূপে সে কীভাবে জড়িয়ে পড়ল, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। আপাতত চারজন রয়েছে সাতদিনের পুলিশ হেফাজতে।
এদিকে, ধৃতদের পরিবারকে এদিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বর্ধমান সাইবার থানা ডেকে পাঠিয়েছিল। তাঁরা মালদহ থেকে বর্ধমান আসার পথে রহস্যজনক ফোন পান সকলে। মা-বাবার দাবি, জনৈক সঞ্জয় নামে একজন নিজেকে আইনজীবীর পরিচয় দিয়ে ফোন করেন তাঁদের। বলা হয়, তাঁদের ধৃত ছেলেরা এখন মেদিনীপুরে রয়েছেন। আদালতে তোলা হলে ৬ বছরের জেল হয়ে যাবে। কিন্তু ১৬ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা দিলে ছেলেদের জামিন নিশ্চিত। ধৃত রকি শেখের বাবা ইরফান জানিয়েছেন, তাঁকে একজন আইনজীবীর পরিচয় দিয়ে বলেন যে ছেলের জামিন হয়ে যাবে, তার বদলে ১৬ হাজার টাকা তখনই তাঁকে পাঠাতে হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ট্যাব দুর্নীতি কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের পরিবারই কি প্রতারণার ফাঁদে পড়ল?